আস্ সালামু আলাইকুম
আল্লাহ তাঁর দুনিয়ায় প্রাণিকুলের জন্য লক্ষ কোটি খাবারের আয়োজন করে রেখেছেন। আমরা মানুষ বুঝে না বুঝে সেসব হয়তো উপলব্ধি করতে পারি অথবা পারি না। যেভাবেই নিত্যনতুন খাবারের সন্ধান পাই না কেনো আর যেভাবেই সে খাবার খাই না কেনো, প্রতিটি খাবারের মধ্যে রয়েছে আলাদা ধরনের স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণে ভরা শারীরিক উপকারিতা। তেমনি একটি খাবারের উপাদান নিয়ে ‘সবার জন্য ব্লগ’ -এ আজ লিখছি, সাজনা পাতা বা শাক সাজনা ডাটার মতই সুস্বাদু।
সাজনা পাতা বা শাক সাজনা ডাটার মতই সুস্বাদু |
সাজনা পাতার পুষ্টি উপাদান:
১০০ গ্রাম সমপরিমাণ সাজনা পাতায় রয়েছে--
ভিটামিন এ ৩৭৮ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন
বি১ (থায়ামিন) ০.২৫৭ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি৩ (নিয়াসিন) ২.২২০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি২
(রিবোফ্লেভিন) ০.৬৬০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি৫ (প্যানটোথেনিক এসিড) ০.১২৫ মিলিগ্রাম,
ভিটামিন বি৯ (ফলেট) ৪০ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি৬ (পাইরিডক্সিন) ১.২ মিলিগ্রাম, ভিটামিন
সি ৫১.৭ মিলিগ্রাম, শক্তি ৬৪ ক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট ৮.২৮ গ্রাম, ফ্যাট ১.৪০, পানি
৭৮.৬৬, ফাইবার ২.০ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৮৫ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ১৪৭ মিলিগ্রাম, ফসফরাস
১১২ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৩৩৭ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ৯ মিলিগ্রাম, জিংক ০.৬ মিলিগ্রাম,
ম্যাঙ্গানিজ ০.৩৬ মিলিগ্রাম, আয়রন ৪ মিলিগ্রাম।
সাজনা পাতা বা শাকের ঔষধী গুণ:
সাজনা পাতার পাতার কিছু অবাক করা ঔষধী গুণের
তথ্য, চলুন জেনে নেওয়া যাক-
১) কলার চেয়ে ৩ গুণ পটাশিয়াম বিদ্যমান সাজনা
পাতায়।
২) গাজরের তুলনায় ৪ গুণ ভিটামিন-এ পাওয়া যায়
এই সাজনা পাতায়।
৩) সাজনা পাতায় কমলা লেবুর তুলনায় ৭ গুণ ভিটামিন-সি
রয়েছে।
৪) দুধের তুলনায় ৪ গুণ ক্যালসিয়াম এবং দুই
গুণ আমিষ রয়েছে।
সাজনা পাতা বা শাকের স্বাস্থ্য উপকারিতা:
সাজনা পাতা বা শাক পানিকে আর্সেনিক মুক্ত করে। এই
মিরাক্কেল ট্রির আরো কিছু অবাক করা গুণ জেনে নিই-
১.
এক টেবিল চামচ শুকনা সাজনা পাতার গুঁড়া থেকে ১-২ বছর বয়সী শিশুদের অত্যাবশ্যকীয় ১৪%
আমিষ, ২৩% লৌহ, ৪০% ক্যালসিয়াম ভিটামিন-এ সরবারহ হয়ে থাকে।
২.
বহুমূত্রের
রোগের (ডায়াবেটিস) জন্য অনেক উপকারি হলো সাজনা পাতা।
৩.
দৈনিক
৬ চামচ সাজনা পাতার গুঁড়া একটি স্তন্যদানকারী মায়ের চাহিদার সবটুকু ক্যালসিয়াম ও আয়রন
সরবারহ করতে সক্ষম।
৪.
সাজনা
পাতা হৃদরোগীদের জন্য ঠিক ওষুদের মত কাজ করে, উচ্চ রক্তচাপ কমায়, কোলেস্টেরল কমায়,
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রিত রাখে।
৫.
প্রতিদিন
সকলে এক চামচ শুকনা গুঁড়া পানিতে গুলিয়ে খেলে পেটের গ্যাস্ট্রিক, প্রদাহ থেকে মুক্তি
পাওয়া যায়।
৬.
সাজনার ফুলেও অনেক উপকার আছে যেমন- হজম শক্তি বাড়ায়, কোষ্ঠ্য কাঠিন্য দূর করে।
৭.
গেটেবাতের
জন্য সাজনা পাতা বেটে হাটুতে বা যে স্থানে ব্যাথা হয় সে স্থানে লাগিয়ে রাখলে ব্যাথা
মুক্তি পাওয়া যায়।
৮.
সাজনা পাতা পোকা কামড়ের তাৎক্ষনিক ভাবে এন্টিসেপ্টিক হিসেবে অনেক ভালো কাজ করে।
৯.
সাজনা
পাতা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরকে ভালো রাখে।
১০.
সাজনা
পাতা হাড়ের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ও আত্মরক্ষায় ভূমিকা পালন করে।
১১.
শরীরের
ওজন কমাতে সাজনা পাতা অনেক সাহায্যে করে। যাদের ওজন অনেক বেশি তাদের জন্য সাজনা খাওয়া
উচিত।
১২.
সাজনা
পাতা গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্যে করে। মায়ের বুকের দুধ তৈরী করে কোনো
ধরনের র্পাশ প্রতিক্রিয়া ছাড়া।
১৩.
সাজনা
পাতা যকৃত ও কিডনির কাজ সুষ্ঠ ভাবে সম্পন্ন করতে সাহায্যে করে। যাদের যকৃত ও কিডনির
সমস্যা আছে তাদের জন্য সাজনা পাতা খুবই উপকারি।
১৪.
সাজনা
পাতা ক্রিমিনাশক হিসেবে কাজ করে। ক্রিমি সমস্যা করলে সাজনা পাতা গুঁড়ো করে বা অন্য
খাবারের সাথে খান।
১৫.
এলার্জি
জনিত সমস্যার জন্য সাজনা পাতা অনেক উপকারি। যাদের এলার্জি জনিত সমস্যা আছে তারা সাজনা
পাতা বেটে আক্রান্ত স্থানে প্রলেপ দিলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
মনে রাখতে হবে, কোনো কিছুই প্রয়োজনের
তুলনায় বেশি খাওয়া নিরাপদ নয়। তাই দীর্ঘদিন খাওয়ার জন্য অবশ্যই ডাক্তারী পরামর্শ নিতে
হবে।
উল্লিখিত সকল তথ্য-
অনলাইন ও নিজের জানাশোনা থেকে।
0 মন্তব্যসমূহ
Always stay connected with SOBAR JONNO BLOG
সবসময় যুক্ত থাকুন সবার জন্য ব্লগের সাথে।