পৃথিবী সুন্দরের পূজারী। পৃথিবী বলবো
কেন,,,,, আল্লাহ/সৃষ্টিকর্তা/বিধাতা/স্রষ্টা নিজেইতো সুন্দরের পূজারী। সেই সূত্রে মানুষও
সুন্দরকে আঁকড়ে ধরে। সুন্দরের কথা আনলাম কেন? মনে হচ্ছে অপ্রাসঙ্গিক, তাই না? একটু
পড়ুন- লিখছি যেহেতু তেলাকুচা পাতা সেহেতু সুন্দর অসুন্দরের প্রশ্ন আসাটাই স্বাভাবিক।
আপনি নিজেই চিন্তা করেন, যদি কেউ আপনার সামনে তেলাকুচা পাতার কথা বলে, আপনিও ভেচকি
দিয়ে বলবেন- দূর, কালো বিশ্রি এমন এক লতার গুণ দিয়ে কী করবো। সেকারণেই সুন্দরের কথা
আনলাম। আমরা সবাই সুন্দরের পিছে ছুটি, ব্যর্থ হয়, দাগা পাই, তারপরও সেখানেই ছুটতে থাকি।
কিন্তু সুন্দরের চেয়ে অসুন্দরের মাঝে বেশি গুণ সেগুলো মাথায় রাখা জরুরি। আজকে এমন একটা
কালো অসুন্দর লতা গাছের কথা লিখছি।
নাম নয় তেলাকুচা পাতার ভেষজ গুণ দেখুন |
সবার জন্য ব্লগ-এ আজকের নিবন্ধ
“নাম নয় তেলাকুচা পাতার ভেষজ গুণ দেখুন“
তেলাকুচা পাতার পুষ্টিগুণ:
স্বাদের পাশাপাশি তেলাকুচা অত্যন্ত পুষ্টিগুণ
সমৃদ্ধ। বিশেষ করে ভিটামিন এবং মিনারেল সমৃদ্ধ। আয়রন ১.৪ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি ( রিবোফ্লাবিন
) ০.০৮ মিলি গ্রাম, প্রোটিন ১.২, ভিটামিন বি১ ০.০৭ মিলিগ্রাম, আঁশ ১.৬ গ্রাম, ক্যালসিয়াম
থাকে ৪০ মিলি গ্রাম। তেলাকুচা ভিটামিন এ এবং সি সমৃদ্ধ।
তেলাকুচা পাতার ভেষজ ঔষধি গুণাগুণ:
তেলাকুচা অনন্য গুণাবলির সমৃদ্ধ এক প্রকারের
ভেষজ উদ্ভিদ। তেলাকুচা ফলে আছে মাস্ট সেল স্টেবিলাইজিং, এনাফাইলেটিক-রোধী এবং এন্টিহিস্টামিন
জাতীয় উপাদান। তেলাকুচা বেশ কিছু রোগে ব্যবহৃত হয়, যেমন- কুষ্ঠ, জ্বর, ডায়াবেটিস, শোথ,
হাঁপানি, জন্ডিস ও ব্রংকাইটিস। ডায়াবেটিস হলে তেলাকুচার
কান্ড সমেত পাতা ছেঁচে রস তৈরী করে আধাকাপ পরিমাণ প্রতিদিন সকাল-বিকাল খেতে হবে।
তেলাকুচা পাতার স্বাস্থ্য উপকারিতা:
পেটে সমস্যা এবং বদহজমের জন্য এই শাক খাওয়ার রেওয়াজ আছে। তেলাকুচ পাতায় পরিমাণ মতো থায়ামিন থাকায় এটি পরিপাক সহায়ক। থায়ামিন কার্বোহাইড্রেটকে গ্লকোজে পরিণত করতে সাহায্যে করে। এটি প্রোটিন এবং চর্বি ভাঙতেও সহযোগিতা করে, স্থুলতায় কমায়। তেলাকুচ পাতা খেলে শরীরের অবসন্নতা কাটে, স্নায়ুতন্ত্র ভালো থাকে, কিডনীতে পাথর সৃষ্টি হতে পারে না।
খাবারের রুচি বৃদ্ধি
করে : ছোট
বড় অনেকেরই খাবারের অরুচি হতে পারে। বিশেষ করে সর্দি লাগলে ভিটামিনের অভাব হয়ে খাবারে
অরুচি হয়। এক্ষেত্রে তেলাকুচার পাতা একটু সিদ্ধ করে পানি ফেলে দিয়ে ঘি দিয়ে শাকের মতো
রান্না করে খেলে রুচি আসবে খাবারে।
ব্রণ ও ফোঁড়াতে :
ব্রণ
বা ফোঁড়ার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে তেলাকুচার পাতা ছেঁচে তার রস বা ছেঁচা পাতা সকাল
বিকেল আক্রান্ত স্থানে লাগালে সেরে যাবে।
অমাশয় নিরাময়ে : মাত্র ৩-৭ দিন তেলাকুচা
গাছের মূল ও পাতার রস ৩-৪ চা চামচ সকালে বিকেলে প্রতিদিন খেলে সেরে যাবে অমাশয়।
জন্ডিস নিরাময়ে :
জন্ডি
মূলত রোগ নয়, রোগ বললেও তার ঔষধ নেই। এক্ষেত্রে ঔষুধ হিসেবে খেতে পারেন এই পাতার রস
ও মূল ছেঁচে। প্রতিদিন সকালে আধা কাপ পরিমাণ।
আরো পড়ুন- লাল শাক, পুঁই শাক, পাট শাক, লাউ শাক, পালং শাক, কচু শাক, কলমি শাক, কুমড়ো শাক-এর বিস্তারিত
শ্বাসকষ্টে : হাপানি রোগ বাদে বুকে
সর্দি বা কাশি বসে যাওয়ার কারণে শ্বাসকষ্টে তেলাকুচার মূল ও পাতার রস কুসুম গরম করে
৩-৪ চা চামচ করে ৩-৭ দিন সকালে ও বিকেলে খেলে পথ্য হিসেবে কাজ করবে।
কাশি সারাতে : যারা শ্লেষ্মাকাশিতে
ভোগেনে এবং কাশতে কাশতে দিশেহারা হয়ে পড়েন তারা তেলাকুচার মূল ও পাতার রস কুসুম গরম
করে ৩-৪ চা চামচ সাথে আধা চামচ মধু মিশিয়ে ৩-৭ দিন সকালে ও বিকেলে খেলে দারুণ উপকার
পাবেন।
মায়ের স্তনে দুধ বাড়াতে
: শিশুর
জন্য মায়ের স্তনে পরিমাণমতো দুধ আনতে এই পাতার রস ও তেলাকুচার ফলের রস খুব কার্যকরি।
পাতা বা ফলের রস হালকা গরম করে মধু মিশিয়ে ২-৫ ফোঁটা করে ৪-৫ দিন সকাল বিকেল খেলে স্তনে
দুধ আসবে।
তেলাকুচা পাতার খাদ্য পদ্ধতি:
তেলাকুচা পাতা এক ধরনের লতা উদ্ভিদ। এর ফল ও কচি ডগা কোন কোন এলাকায়
খাদ্য হিসেবে খাওয়া হয়। তেলাকুচার কাঁচা ফল তরকারি হিসেবে খাওয়া যায়। পাতা শাক হিসেবে
ভেজে খাওয়া যায়। এছাড়া কাঁচা ফল এবং কচি পাতা দিয়ে সুপ বানিয়ে খাওয়া যায়। কাঁচা ফল
পটলের মতো দুই চির করে ভেজে খাওয়া যায়। থাইল্যান্ড বিভিন্ন তরকারি এবং স্যুপ ফল ব্যবহার
করা হয়। ভারত ও বাংলাদেশে খাওয়া হলেও চাষ হতে দেখা যায় না।
সাবধানতা:
যদি কারো মনে হয়, এই পাতার রস ও ফল
খেলে এলার্জি ও প্রদাহের সৃষ্টি হচ্ছে তাহলে অবশ্যই এড়িয়ে যেতে হবে। কারণ সব মানুষের
দেহে সবকিছু স্যুট করবে না এটাই স্বাভাবিক।
কেমন লাগলো এই নিবন্ধ-
নাম নয় তেলাকুচা পাতার ভেষজ গুণ দেখুন
অবশ্যই জানাবেন, ধন্যবাদ।
উল্লিখিত
সকল তথ্য অনলাইন ও নিজের জানা থেকে।
0 মন্তব্যসমূহ
Always stay connected with SOBAR JONNO BLOG
সবসময় যুক্ত থাকুন সবার জন্য ব্লগের সাথে।