থানকুনি পাতা নিজেই যখন ডাক্তার, জানুন অপকারিতাও । While Thankuni leaf itself is a doctor, know its side effects too

থানকুনি পাতার নাম, তার গুণের কথা প্রায় সবাই শুনেছি বা জানি, কিন্তু আসলে কী কী গুণ বা উপকারিতা, অপকারিতা রয়েছে সেটা বোধ হয় অনেকেরই অজানা।

থানকুনি পাতার গুণ, থানকুনি পাতার পুষ্টি উপাদান, থানকুনি পাতার ঔষধী গুণ, থানকুনি পাতার স্বাস্থ্য উপকারিতা, থানকুনি পাতার ক্ষতিকারক দিক, থানকুনি পাতার অপকারিতা, থানকুনি পাতার যেসব রোগের মেডিসিন, থানকুনি পাতা কেন এত প্রয়োজন, থানকুনি পাতা কোথায় জন্মে, থানকুনি পাতা কোথায় পাওয়া যায় । Benefits of Thankuni leaves, Nutrient content of Thankuni leaves, Medicinal properties of Thankuni leaves, Health benefits of Thankuni leaves, Harmful aspects of Thankuni leaves, Injuries of Thankuni leaves, Medicines for the diseases of Thankuni leaves, Why is Thankuni leaves so necessary, Where are Thankuni leaves grown, Where to get Thankuni leaves
থানকুনি পাতা নিজেই যখন ডাক্তার, জানুন অপকারিতাও

 

সবার জন্য ব্লগ –এ আজকের লেখায় থাকছে-

থানকুনি পাতা নিজেই যখন ডাক্তার, জানুন অপকারিতাও

 আরো পড়ুন-  লাল শাক, পুঁই শাক, পাট শাক, লাউ শাক, পালং শাক, কচু  শাক, কলমি শাক, কুমড়ো শাক, তেলাকুচা পাতা-এর বিস্তারিত

থানকুনি পাতার কিছু গুণ:

১. ১চা চামচ শিউলি পাতার রসের সাথে থানকুনির পাতার রস ১ চা চামচ মিশিয়ে কয়েকদিন সকালে খেলে জ্বর সেরে যাবে।

২. অল্প পরিমাণ আম গাছের ছাল, কচি আনারসের পাতা ১টি, কাঁচা হলুদের রস, ৪/৫ টি থানকুনি গাছ শিকড়সহ ভালো করে ধুয়ে একত্রে বেটে রস করে খালি পেটে খেলে পেটের অসুখ ভালো হয়ে যায়। ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এটা আরো বেশি উপকার।

৩. বেগুন/পেঁপের সাথে থানকুনি পাতা মিশিয়ে রান্না করে প্রতিদিন ১ মাস খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।

৪.  যে সব বা্চ্চা কথা বলতে দেরি করে,সে ক্ষেত্রে ১ চামচ করে থানকুনি পাতার রস গরম করে ঠান্ডা হলে ২০/২৫ ফোঁটা মধু মিশিয়ে ঠান্ডা দুধের সাথে কিছুদিন খাওয়ালে অসুবিধাটা সেরে যায়।

৫.  প্রতিদিন সকালে খালিপেটে ৪ চা চামচ থানকুনি পাতার রস ও ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে খেলে রকাত দূষণ ভালো হয়।

৬. আধা কেজি দুধে ২৫০ গ্রাম ও ১৭৫ গ্রাম থানকুনি পাতার রস একত্রে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে ১ সপ্ত খেলে গ্যাস্ট্রিক ভালো হয়

৭. প্রতিদিন সকালে ৫/৭ টি থানকুনি পাতা চিবিয়ে ৭ দিন খেলে আমাশয় ভালো হয়।   

৮. ২ চামচ থানকুনির রস সামান্য চিনিসহ খেলে সঙ্গে সঙ্গে খুসখুসে কাশি ভালো হয়। ১ সপ্তাহ খেলে পুরোপুরি ভালো হয়ে যাবে।

আরো পড়ুন-  লাল শাক, পুঁই শাক, পাট শাক, লাউ শাক, পালং শাক, কচু  শাক, কলমি শাক, কুমড়ো শাক, তেলাকুচা পাতা-এর বিস্তারিত

৯. মূলসহ সমগ্র গাছ নিয়ে সিদ্ধ সেই পানি দিয়ে দূষিত ক্ষত ধুতে হবে।

১০. থানকুনি পাতা সিদ্ধ পানি দিয়ে গরগরা করতে হবে।

১১. কোথাও থেঁতলে গেলে থানকুনি গাছ বেটে হালকা গরম করে আঘাত প্রাপ্ত স্থানে প্রলেপ দিলে উপকার পাবেন।

১২. যদি মুখ মলিন হয়, লাবণ্যতা কমে যায় তবে ৫-৬ চা চামচ থানকুনি পাতার রস দুধ দিয়ে খেতে হবে। নিয়মিত করলে উপকার পাবেন।

১৩. অপুষ্টির অভাবে, ভিটামিনের অভাবে চুল পড়লে পুষ্টিকর ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবারের পাশাপাশি ৫-৬ চামচ থানকুনি পাতার সাথে মিশিয়ে খেতে হবে।

১৪. মলের সঙ্গে শ্লেষ্মা গেলে, মল পরিষ্কারভাবে না হলে, পেটে গ্যাস হলে, কোনো কোনো সময় মাথা ধরা এ ক্ষেত্রে ৩-৪ চামচ থানকুনি পাতার রস গরম ও সমপরিমাণে গরুর দুধ মিশিয়ে খেতে হবে।

১৫. মনে না থাকলে আধা কাপ দুধ, ২-৩ তোলা থানকুনি পাতার রস ও এক চা চামচ মধু মিশিয়ে খেতে হবে।    

১৬. ঠান্ডায় নাক বন্ধ হলে, সর্দি হলে থানকুনির শিকড় ও ডাটার মিহি গুঁড়ার নস্যি নিলে উপকার পাওয়া যায়।

 

থানকুনি পাতা কেন খাবেন:

হজম শক্তি বাড়াতে : হজম শক্তি বাড়াতে পারে থানকুনি পাতা। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, থানকুনি পাতায় উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান হজমে সহায়তা অ্যাসিডের ক্ষরণ যাতে ঠিক মতো হয় সেদিকে খেয়াল রাখা।

পেটের সমস্যা দূর করতে : আলসার এগজিমা, চুলকানি, হাঁপানি, অন্যান্য রোগ সারাতে থানকুনি পাতা সহায়তা করে। জ্বর, আমাশয়, আলসার, বাতের ব্যাথা বিভিন্ন অসুখের ঔষধ হিসেবে ব্যবহার হয়েছ। নিয়মিত থানকুনির রস খেলে ত্বক ও চুল সুন্দর থাকে।

কাশি ও ঠান্ডা নিরাময়ে : কাশি ও ঠান্ডা লাগার দূর করতে থানকুনি পাতার রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খান। প্রতিদিন সকালে একটু পরিমাণ থানকুনি পাতার রসের সাথে ১ চামচ মধু মিশিয়ে খেলে রক্তে উপস্থিত ক্ষতিকর উপাদান গুলি বেরিয়ে যায়।  

আরো পড়ুন-  লাল শাক, পুঁই শাক, পাট শাক, লাউ শাক, পালং শাক, কচু  শাক, কলমি শাক, কুমড়ো শাক, তেলাকুচা পাতা-এর বিস্তারিত

ভিটামিন সি’র অভাব দূর করতে : ভিটামিন সি যুক্ত থানকুনি পাতা নিয়মিত খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। থানকুনি পাতায় উপস্থিত অ্যামিনো এসিড, বেটা ক্যারোটিন, ফ্যাটি এসিড এবং ফাইটোক্যামিক্যাল ত্বকের ভেতর থেকে পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে।

বলিরেখা দূর করতে : ত্বকের বলিরেখা কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থানকুনি পাতা। এছাড়া ত্বকের উজ্জলতা বাড়ে ও বলি রেখা পড়ে না।

স্নায়ুতন্ত্র : থানকুনি কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে সক্রিয় রাখতে সাহায্যে করে। সংবহনতন্ত্রের স্থায়ীভাবে স্ফতি ও বর্ধিত শিরা কমাতে সহায়তা করে। থানকুনি পাতা চামড়া মসৃণ করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষকে পুনগঠর্নে সাহয্যে কর।

থানকুনি পাতার উপকারিতা : 

থানকুনি পাতায় ভেষজ গুণের পাশাপাশি রয়েছে জানা অজানা নানা ধরনের ঔষধি গুণাবলি। থানকুনি পাতা আমাদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে আমাদের নানান ভাবে উপকার কর। চলুন তাহলে জেনে নিই থানকুনি পাতার উপকারিতা সম্পর্কে-

চুলের বৃদ্ধি বাড়াতে:

বতর্মানে নারীদের একটি প্রধান সমস্যা হলো চুল পড়া। লিঙ্গভেদে যেকোনো ধরনের বয়সের মানুষ এই সমস্যায় আক্রান্ত। কিছু উপায় মেনে চললেই এই সকল রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। চুল পড়ার সমস্যায় বেশিউপকারি হলো এই থানকুনি পাতা। প্রথমত কিছু থানকুনি পাতা ভালোমতো ধুয়ে, তা বেটে কিংবা থেতো করে নিতে হবে।তার সাথে কিছু তুলসি পাতা পাতা বেটে একসাথে একটি প্যাক বানিয়ে নিতে হবে। প্যাকটি বানানো হয়ে গেলে তা চুলের স্কাল্পে লাগিয়ে সর্বোচ্চ ১০ মিনিট রেখে দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই প্যাকটি সপ্তাহে ২ বার ব্যবহার করলে, আপনার চুল পড়ার সমস্যা অনেকটা কমে যাবে।

মানবদেহ থেকে বিষাক্ত উপাদান প্রশমনের ক্ষেত্রে:   

আমরা যখন কোন ধরনের কাদ্য গ্রহণ করি, সেই খাদ্য উপাদানটি থেকে ভালো উপাদান যেমন আমাদের দেহে একদিকে জমা হয়। ঠিক অন্যদিকে, খারাপ বা বিষাক্ত উপাদান একদিকে জমা হয়। আপনি চাইলে শরীরের সব বিষাক্ত ঝেড়ে ফেলতে পারেন। তা কীভাবে? নিয়মিত প্রতিদিন সকালে থানকুনি পাতা বেটে সেই থেকে প্রাপ্ত রসের সাথে, এক চামচ মধু মিশিয়ে যুক্ত করে প্রতিদিন খাওয়ার ফলে শরীর থেকে সমস্ত বিষাক্ত উপাদান ছড়িয়ে ফেলতে পারে এক  মুহূর্তে ।

পায়ের ব্যথা প্রশমনে:

আমাদের অনেক সময় পায়ে প্রচন্ড ব্যাথা হয়। পা ফুলে যায়, অকে যন্ত্রনা করে, সে ক্ষেত্রে থানকুনি পাতা খেলে পা ফুলে যাওয়া থেকে শুরু করে পায়ের ব্যাথা কমাতে সাহায্যে করে।

 আরো পড়ুন-  লাল শাক, পুঁই শাক, পাট শাক, লাউ শাক, পালং শাক, কচু  শাক, কলমি শাক, কুমড়ো শাক, তেলাকুচা পাতা-এর বিস্তারিত

থানকুনি পাতার অপকারিতা:

উপকারিতার পাশাপাশি থানকুনি পাতারঅিপকারিতার দিকও রয়েছে। চলুন তাহলে জেনে নেওযা যাক থানকুনি পাতার অপকারিতার দিক গুলো:

১. প্রয়োজনের তুলনায় অত্যাধিক থানকুনি পাতা খাওয়ার ফলে আপনার মাথা ঘুরার মতো নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

২. যারা লিভারের নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত রয়েছেন, তাদের কোনো ভাবেই থানকুনি পাতা উচিত নয়। থানকুনি পাতা খাওয়ার ফলে তারা ধরনের সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারে।

৩. বিভিন্ন ধরনের খোস পাচড়ার কিংবা এলার্জি জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।


প্রকৃতিতে এমন হাজারো রকমের বিশেষ উপকারী উপাদান রয়েছে। প্রয়োজন শুধু আমাদের জেনে সঠিকভাবে প্রয়োগ করা। নিজে জানুন, অপরকে জানান, ধন্যবাদ।


সকল তথ্যের উৎস অনলাইন কেন্দ্রিক,

Sobar Jonno Blog' এর সাথে থাকুন।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ