লেবুর মত অনেক ফলমূল বা সবজি আছে যেগুলোর কিছুই ফেলনা না, খোসা বা চামড়া থেকে সব কিছুই খাদ্য উপযোগী ও
গুণে ভরপুর। বিশেষ করে করোনা মহামারিতে লেবুর উপকার অনস্বীকার্য। এই আর্টিকেলে
লেবুর রস ও খোসার উপকারিতা জানানোর চেষ্টা করতেই লিখছি “লেবুর রস ও লেবুর খোসার উপকারিতা”
সবাই অনেক ভাল আছেন প্রত্যাশা রেখে “সবার জন্য ব্লগ”-এর স্বাস্থ্যবার্তায় যোগ করছি, “লেবুর রস ও লেবুর খোসার উপকারিতা”। আশা করছি উপকৃত হবেন।
![]() |
লেবুর রস ও লেবুর খোসার উপকারিতা । Benefits of lemon juice and lemon peel |
:::: চোখ রাখি লেবুর
প্রাকৃতিক গুণের দিকে ::::
লেবুর গুণ আছে জানি, কিন্তু বিস্তারিত গুণের ব্যাখ্যা কতজনই খুঁজি
বা জানি। বাজারে পাওয়া যায়, পাতি লেবু, কমলালেবু, বাতাবিলেবু, গন্ধরাজ লেবু, মোসাম্বিলেবু ইত্যাদি। এসব লেবুতে ভিটামিন ‘সি’ ভরপুর। ১০০গ্রাম কাগজি বা পাতি লেবু থেকে পুষ্টি উপাদান
পাওয়া যায়- ভিটামিন সি ৬৩ মিলিগ্রাম যা আপেলের প্রায় ৩২ গুণ ও আঙ্গুর
ফলের দ্বিগুণ, ক্যালসিয়াম ৯০ মিলিগ্রাম,
আয়রণ ০.৩ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ২০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি ০.১৫ মিলিগ্রাম, ভিটামিন এ ১৫ মাইক্রোগ্রাম। একজন শিশুর দৈনিক ২০ মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি প্রয়োজন। না হলে শিশুর দাঁত, মাড়ি ও পেশি মজবুত হতে পারেনা। তাছাড়া জ্বর সর্দিতে ও অরুচি
ভাব দূর করতে দারুণ কাজ করে লেবু ও লেবুর খোসা।
:::: লেবুর রসের উপকারিতা ::::
আমরা লেবুর
শরবত খেতে দারুণ অভ্যস্ত। বিশেষ করে গরমে এর ব্যবহার প্রচুর। কিন্তু মনে রাখতে হবে
সব ঋতুতেই লেবুর শরবত উপকারি শরীরের জন্য। ১গ্লাস লেবুর শরবত কিভাবে আপনাকে উপকৃত
করবে-
·
ক্লান্তি
দূর করবে : হয়তো সবাই জানি গরমের ক্লান্তি দূর করতে লেবুর শরবতের জুড়ি
মেলা ভার। আপনি যে কোনো সময় ক্লান্ত অনুভব করলে এক গ্লাস লেবুর শরবত পান করে ফেলুন
নিমিষেই মুছে যাবে ক্লান্তি। এছাড়াও লেবুতে থাকা ভিটামিন সি অবসাদ ও মানসিক চাপ
দূর করে মনকে চাঙ্গা ও ফুরফুরে করে তোলে।
·
ঠান্ডাজনিত
রোগের চিকিৎসা দেয় : শীতকালে বেশিরভাগ মানুষেরই ঠান্ডা, সর্দি-কাশি, গলাব্যথা, টনসিল সমস্যা, শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা দেখা দেয়। কুসুম গরম পানির সাথে
লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খেলে দ্রুতই উপকার মিলবে। অ্যাজমার মতো কঠিন যন্ত্রণাদায়ক
রোগের ক্ষেত্রেও ফুসফুস পরিষ্কার রেখে উপশম দেয়।
·
চর্বি কমিয়ে
দেয় : আপনার যদি ক্ষুধা কম থাকে তাহলে খাবার চাহিদা কম থাকবে। আর
কম খাবার খেলে অবশ্যেই পেটে চর্বি জমতে পারবে না। লেবুতে থাকা আঁশ জাতিয় পদার্থ
প্যাকটিন আপনার ক্ষুধা কমিয়ে রাখে। আামাদের দেশের মানুষ আবহাওয়ার কারণে মোটা হয়ে
থাকে। তাই তাঁরা চর্বি কমাতে ডাক্তারের কাছে লাইন দেন। তবে লেবুর ব্যবহার যদি
নিয়মিত করতেন তবে এসব ঝামেলা পোহাতে হত না। খাবার টেবিলে লেবু কিংবা মাত্র ১গ্লাস
লেবুর শরবত নিয়মিত খেলেই মুক্তি মিলবে বাড়তি ওজন থেকে।
Find out all the news from here
Learn more health tips and lifestyle here
·
পিত্তথলির
পাথর দূর করে : বিভিন্ন কারণে পিত্তথলির পাথর হয়ে থাকে, বিশেষ করে চর্বি জমতে জমতে একসময় পাথরে পরিণত
হয়। আর এই পিত্তথলির পাথর কাটতে দরকার এন্টিচর্বি পদার্থ। লেবুতে থাকা উচ্চমাত্রার
ফাইবার ও আঁশ পিত্তথলির পাথর দূর করতে সাহায্য করে।
·
রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় : লেবুতে থাকা ভিটামিন, আয়রণ, ক্যালসিয়াম, ফলিক এসিডসহ যাবতীয় পুষ্টি উপাদান মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করে।
·
ক্যান্সারের
বিরুদ্ধে লড়ে : যে কোনো ধরনের ক্যান্সার বিস্তার ঘটার অন্যতম দায়ী উপাদান
ভিটামিন সি’র অভাব ও আঁশ জাতিয় খাবার। কারণ আঁশ ও ভিটামিন সি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। লেবুতে উক্ত উপাদান
প্রচুর থাকায় সব ধরনের ক্যান্সার সেলের বিরুদ্ধে লড়াই করে।
এছাড়াও
লেবুর রস-
১। কৃমির হাত থেকে রক্ষা করে।
২। হজমশক্তি বাড়ায়।
৩। লিভারের ইনফেকশন দূর করে।
৪। বুক জ্বালা-পোড়া রোধ করে।
৫। এসিডিটি থেকে মুক্তি দেয়।
৬। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে তোলে।
৭। বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ ক্ষত সারাতে ভূমিকা রাখে।
Find out all the news from here
Learn more health tips and lifestyle here
:::: লেবুর খোসার উপকারিতা ::::
লেবুর রসের পাশাপাশি লেবুর খোসাতে রয়েছে, ভিটমিন সি, পেকটিন, ফাইবার, মিনারেলস ও ক্যালসিয়াম। লেবুর খোসার এসব উপাদান দেহের
আরোগ্য ও নিরাময়ের কাজ করে। বিশেষ করে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা একদম কমিয়ে দিয়ে
ভাল কোলেস্টেরেলের মাত্রা প্রয়োজন মোতাবেক বাড়িয়ে দেয়।
·
লেবুর খোসা
খেলে অথবা সরাসরি ত্বকে লাগালে ত্বকের কালো দাগ,
বলিরেখা, বয়সের ছাপ দূর করে টানটান ও উজ্জ্বল ত্বক উপহার দেয়।
·
লেবুর খোসা
জয়েন্টের ব্যথায় কার্যকরি, লিগামেন্টের জন্য খুব উপকারি।
·
হার্টের
জন্য লেবুর খোসার জুড়ি মেলা ভার। এর উপাদান হার্টকে ভাল রাখে।
·
লেবুতে পটাশিয়াম
থাকার কারণে দেহের রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে।
·
লেবুর খোসা
খেলে শরীরের বাজে কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয়।
·
কোষ্ঠকাঠিন্য
দূর করতে লেবুর খোসা নিশ্চিন্তে খেতে পারেন। উপস্থিত ফাইবার ও আঁশ অন্ত্রকে
পরিষ্কার রাখে এবং পেট ফোলাভাব রোধ করে।
·
লেবুর খোসায়
প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে, তাই আামদের হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখে।
·
লেবুর
খোসাতে থাকা উপাদান রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং বিপাকে সাহায্য করে; ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে।
Find out all the news from here
Learn more health tips and lifestyle here
এখন আপনারাই সিদ্ধান্ত নিন কি খাবেন? লেবুর রস না লেবুর খোসা। আমি কিন্তু সবসময়
লেবুর রস ও খোসাসহ পুরোটায় খেয়ে থাকি। উপকার যেহেতু সবটাতেই তাই আলাদা না করে পুরো
লেবু খাওয়ায় মনে হয় ভাল। আপনার মন্তব্য
জানান কমেন্ট বক্সে।
আজ ছাড়ছি, কথা হবে অন্য কোনো লেখার মাধ্যমে। ইনশাআল্লাহ্!
অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি, “Sobar Jonno Blog” –এর সাথে
থাকার জন্য।
নিজে জেনে অন্যকে জানাতে শেয়ার করুন।
Find out all the news from here
Learn more health tips and lifestyle here
0 মন্তব্যসমূহ
Always stay connected with SOBAR JONNO BLOG
সবসময় যুক্ত থাকুন সবার জন্য ব্লগের সাথে।