( শুধুমাত্র লেবু আর আদা। ব্যস, চিরতরে ভুলে যাবেন গ্যাস্ট্রিক (Gastric) শব্দ। সাথে করোনা, অতিরিক্ত চর্বি অর্থ্যাৎ মেদ ঝরান এবং ত্বক রাখুন ব্রণ ও দাগমুক্ত মসৃণ। বলে ফেললেন, অসম্ভব!! তাইতো? কোনো কল্পকাহিনী লিখছি না, আমার নিজের শরীরে প্রয়োগ করে যাওয়া বাস্তব সত্য পথ্যের উপস্থাপন শেয়ার করছি মাত্র। আমার গ্যাস্ট্রিক (Gastric) নামের এই যন্ত্রণা ছিল বহুবছর। বাজার থেকে নিয়মিত গ্যাস্ট্রিক (Gastric) ঔধষ খেতে খেতে বিরক্ত হয়ে পড়েছিলাম। খেলে কিছু সময়ের জন্য ভাল লাগত বটে, কিন্তু শরীরের অন্যান্য যন্ত্রপাতিতে অসুবিধা হতো বুঝতাম।
তারপর অনলাইনে বহু ঘাটাঘাটি করার পর এই ব্যবস্থা পাবার পর আমি নিয়মিত এখন সেবন করছি এবং আজ অনেকদিন যাবৎ কোনো ঔষধ সেবন করতে হচ্ছে না। শরীরটা যেন প্রতিদিন সেবনের পরে রিফ্রেশ হয়ে যায়। সাথে অতিরিক্ত চর্বি অনেক কমে গেছে এবং করোনা’র ভয় থেকেও সাহস জোগাচ্ছে। এখন খুব ভাল লাগে। নিশ্চয়তা দিচ্ছি, লেখাটি পড়ে নির্দেশনা পালন করুন, আপনি যে বয়সেরই হোন না কেন? গ্যাস্ট্রিক (Gastric) -এ আর জ্বলবেন না –ইনশাআল্লাহ্ )
গ্যাস্ট্রিক থেকে চিরতরে মুক্তির প্রাকৃতিক উপায় । How To Get Rid Of Gastric Naturally
এই মিশ্রণটি যে যে রোগের জন্য কাজ করবে :
১। এসিডিটি অর্থ্যাৎ গ্যাস্ট্রিক (Gastric) দূর করবে।
২। চর্বি বা অতিরিক্ত মেদ ঝরাবে।
৩। করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত রাখবে।
৪। ঠান্ডা কাশির উপশম হবে।
আমরা যারা নিয়মিত অনিয়মের ফলে গ্যাস্ট্রিক (Gastric) নামের বিধান বহির্ভূত রোগে আক্রান্ত হয়ে গেছি, তাদের জন্য খুব সহজ উপায়ে সমাধানের পথ বলে দিচ্ছি। তবে মনে রাখবেন, রাস্তার হকারদের মতো ব্যাঁকা ত্যাড়া সোজা আর পুঁইগাছ থেকে তালগাছ বানানোর জন্য মাত্র ১ সপ্তাহ বা ১৫ দিনের ফর্মূলা দিতে পারব না।
অতিরিক্ত গ্যাস বৃদ্ধি তথা গ্যাস্ট্রিক (Gastric) এর কারনে যে যে লক্ষণগুলো দেখা দেয় :
যথা- বুক জ্বালাপোড়া, পেটের উপরের অংশে ব্যথা বা জ্বালা পোড়া, পেট ফাঁপা, টক ঢেঁকুর, গ্যাস, বমিভাব, মুখে দুর্গন্ধ, ক্ষুধামন্দা, অল্প খেলেই ভরপেট অনুভব, ওজন হ্রাস, পিঠে ও বুকে ব্যথা ইত্যাদি লক্ষণ প্রকাশ পায়।
যেভাবে তৈরি করতে হবে মিশ্রণটি:
উপাদান : লেবু ও প্রয়োজনমত আদা।
গ্যাস্ট্রিক থেকে চিরতরে মুক্তির প্রাকৃতিক উপায় (how to get rid of gastric naturally) এর জন্য ২টি উপায় তুলে ধরব, যার যেভাবে সুবিধা মনে হবে তিনি সেভাবেই সেবন করবেন।
প্রথম উপায় :
![]() |
গ্যাস্ট্রিক থেকে চিরমুক্তির উপায় |
লেবু ও আদা ভালভাবে ধুয়ে নিন। তারপর ছবিতে দেখানো লেবুর খোসাসহ এবং আদার খোসা ছাড়িয়ে কুচি কুচি করে কেটে নিন। যতটা ছোট করতে পারবেন ততটাই ভাল হবে। এরপর পরিষ্কার পাত্রে দেড় গ্লাস (১ গ্লাস ও অর্ধেক গ্লাস) খাবার পানি দিয়ে চুলার উপর বসিয়ে ফোটাতে থাকুন। ৭ থেকে ১০ মিনিট ফোটানোর পর এই মিশ্রণ থেকে একটা সুন্দর ফ্লেভার বের হবে এবং দেড় গ্লাসের পরিমানটা ১ গ্লাস হয়ে যাবে। তখন নামিয়ে পরিষ্কার ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে ফেলুন, হয়ে গেল গ্যাস বৃদ্ধি তথা গ্যাস্ট্রিক (Gastric) এর ঔষধ। মোটামুটি যতটা গরম সহ্য করা যায় সেরকম ঠান্ডা করে খেয়ে নিন। চায়ের মত খেতে থাকুন। মাঝে মাঝে গড়গড়া করবেন।
দ্বিতীয় উপায় :
![]() |
গ্যাস্ট্রিক থেকে চিরমুক্তির উপায় |
লেবু ও আদা ভালভাবে ধুয়ে নিন। তারপর পরিষ্কার পাত্রে লেবু কেটে রস ভালভাবে চিপে নিন, যারা তিতা ভয় পান তাদের বলছি, আপনি লেবুর খোসা ছাড়িয়ে চিপে নিন তাহলে তিতা কম লাগবে। এর সাথে প্রয়োজনমত আদা ধুয়ে খোসা ফেলে মোটামুটি ছোট টুকরো করে থেতলে রস বের করে নিন, এখন লেবুর রস ও আদা থেঁতলানো রস একসাথে করে একগ্লাস পানি দিয়ে একটু সময়ের জন্য ফুটিয়ে নিন। তারপর ছেঁকে ফেলুন। হয়ে যাবে গ্যাস বৃদ্ধি তথা গ্যাস্ট্রিক (Gastric) এর ঔষধ। মোটামুটি গরম পান করুন ও গড়গড়া করুন। (১ম পদ্ধতির চেয়ে ২য় পদ্ধতিটা বেশ সহজ এবং সঠিক মিশ্রণ পাওয়া যায়, আমি নিয়মিত ২য় পদ্ধতি ব্যবহার করে আসছি) ব্যস, দেখতে থাকুন প্রথম দিন থেকেই, কি জাদু আল্লাহর নিয়ামতের। দেখবেন পেট একদম পরিষ্কার থাকবে, পেটের চর্বি কমতে শুরু করবে, ঠান্ডা কাশি দূর হবে, শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যথার উপশম হবে, করোনার প্রধান ঔষধ ভিটামিন ‘সি’ অর্থ্যাৎ আপনি করোনার ভয় থেকেও মুক্ত থাকতে পারবেন। (ইনশাআল্লাহ্)
অবশ্যই যা পালনীয় : গ্যাস্ট্রিক থেকে চিরতরে মুক্তির প্রাকৃতিক উপায় (How To Get Rid Of Gastric Naturally) এর জন্য-
- ঘুম থেকে উঠে পানি ব্যতিত কিছু খেতে পারবেন না। পানিতে শূন্য ক্যালরী থাকে বিধায় পানি পান করলে সমস্যা নেই। কিন্তু এই মিশ্রণ খাবার পূর্বে কোনো কিছু খাওয়া যাবে না।
- এসিডিটি অর্থ্যাৎ গ্যাস্ট্রিক (Gastric) থেকে মুক্ত থাকতে নিয়মিত খাবার খেতে হবে, ভরপেট খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে।
- এসিডিটি অর্থ্যাৎ গ্যাস্ট্রিক (Gastric) থেকে মুক্ত থাকতে ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে।
- এসিডিটি অর্থ্যাৎ গ্যাস্ট্রিক (Gastric) থেকে মুক্ত থাকতে প্রতিদিন কমপক্ষে ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করতে হবে।
সতর্কতা : গ্যাস্ট্রিক থেকে চিরতরে মুক্তির প্রাকৃতিক উপায় (How To Get Rid Of Gastric Naturally) এর জন্য-
- এই মিশ্রণ পান করলে শরীর কিছু সময়ের জন্য ঘামতে থাকবে। ভয় পাবার কিছু নেই। এই ঘাম মানেই চর্বি কেটে যাওয়া। তাই অফিস বা কোথাও বের হওয়ার কিছু সময় পূর্বে সেবন করে নিবেন, তাহলে পোষাক নষ্ট বা বিরক্তিভাব আসবে না।
- যাদের লেবুতে মনে হবে পেটের সমস্যা বাড়ছে তাঁরা লেবু কম করে আদা বেশি করে মিশ্রণ করবেন। কারন মানুষের শরীরের রোগ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সবার এক হয়না, তাই যে সকল খাবারে শরীরে সমস্যা সৃষ্টি করে সেগুলো সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে হয়।
স্বাস্থ্যকথা ও লাইফস্টাইল নিয়ে আরো আর্টিকেল পড়ুন এখানে
পরামর্শ : গ্যাস্ট্রিক থেকে চিরতরে মুক্তির প্রাকৃতিক উপায় (How To Get Rid Of Gastric Naturally) এর জন্য-
প্রথম ১৫ দিন থেকে ১ মাস খুব মনোযোগী হন, তারপর থেকে লেবু ও আদার পরিমাণ কম দিলেও সমস্যা হবেনা। আর প্রাকৃতিক এই মিশ্রণে উপকার ছাড়া ক্ষতি নেই, তাই প্রতিদিন সকালে একগ্লাস এই মিশ্রণ পরিবারের সবাই খাওয়ার অভ্যেস করে ফেলুন। উপকারিতা নিজেই বুঝতে পারবেন। আমি প্রচন্ড গ্যাস্ট্রিক (Gastric) নামের এই সমস্যায় দীর্ঘদিন ভূগছিলাম, এখন নিয়মিতে এটাতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। গ্যাস্ট্রিক (Gastric) নামের এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তিসহ অনেক কিছু থেকে ভাল আছি। অনেক কিছুর জন্য ঔষধ খেতে হতো, আজ কয়েকমাস ধরে কোনো ঔধষ খেতে হচ্ছে না। শরীরে এনার্জী আসে, মেজাজটা ফুরফুরে থাকে। আজেবাজে খাবারের চাহিদাও কমে গেছে। মনে রাখতে হবে শরীরও একটা যন্ত্র, তাকে সঠিক নিয়মে পরিচালনা করতে হবে, নয়তো ভাল থাকা মুশকিল।
যত্রতত্র রাস্তার খোলাখাবার ও ভাজাপোড়া খাবার পরিহার করুন আর গ্যাস্ট্রিক (Gastric) মুক্ত জীবন গড়ুন।
মনে রাখবেন, আজকের সামান্য এসিডিটি অর্থ্যাৎ গ্যাস্ট্রিক (Gastric) সমস্যা আগামীতে রূপ নিতে পারে পেপটিক আলসার, গ্যাস্ট্রিক আলসার বা পাকস্থালীর ক্যান্সারের মত জটিল রোগে। তাই কিছু সহজ নিয়ম মেনে সুস্থ ও সুন্দর জীবনযাপন করুন। কারো এসিডিটি তথা গ্যাস্ট্রিক (Gastric) উপসর্গ দেখা দিলে ফার্মেসী থেকে নিজের ইচ্ছা মতো ঔষুধ না খেয়ে আসলে কি রোগ হয়েছে তা ডাক্তার দেখিয়ে রোগ নির্নয় করে প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ।
সম্মানিত পাঠকগণ,
আশা করছি, গ্যাস্ট্রিক থেকে চিরতরে মুক্তির প্রাকৃতিক উপায় (How To Get Rid Of Gastric Naturally) আর্টিকেলটি পড়ে কিছুটা উপকৃত হতে পেরেছেন। অসঙ্গতি সংশোধনযোগ্য।
মন্তব্য ও পরামর্শ দিন কমেন্ট বক্সে, শেয়ার করে নিজে জেনে অন্যকে জানার সুযোগ করে দিন।
ভাল থাকুন আর ‘সবার জন্য ব্লগ’ এর সাথে থাকুন।
লেখক : মসনদ সাগর-
শিক্ষক, লেখক, গবেষক ও ফ্রিল্যান্সার,
by- sobar jonno blog –সবার জন্য ব্লগ
শিক্ষক, লেখক, গবেষক ও ফ্রিল্যান্সার,
by- sobar jonno blog –সবার জন্য ব্লগ
0 মন্তব্যসমূহ
Always stay connected with SOBAR JONNO BLOG
সবসময় যুক্ত থাকুন সবার জন্য ব্লগের সাথে।