রোমান্টিক স্যাড উপন্যাস সাগরের স্মৃতি- ৮ম পর্ব । Romantic Sad Novel 'Sagorer Smriti' - Part 8

পাঠকগণ;
শুরুতেই বলে রাখা ভাল, গল্পের মূলভাব ও উপন্যাস-এর নামের সাথে সমন্বয় করতেই পুরুষ(মূল) চরিত্রে সাগর নাম ব্যবহার করা হয়েছে।

।সেজন্য গল্পের সাথে বাস্তবিক নামের মিল খোঁজা একান্তই অমূলক।

খাঁটি প্রেমের গল্প দিয়ে সাজানো রোমান্টিক স্যাড উপন্যাস সাগরের স্মৃতি । Romantic Sad Novel 'Sagorer Smriti। হাসি কান্না আর বাস্তবতার গল্প সাগরের স্মৃতি
সাগরের স্মৃতি উপন্যাস

রোমান্টিক স্যাড উপন্যাস সাগরের স্মৃতি । Romantic Sad Novel 'Sagorer Smriti' -সম্পূর্ণ পড়ুন


*****

  এই মূহুর্তে সাগরের শরীর একদম ঠান্ডা হয়ে গেলো। সর্বনাশের কিছু বাকি রইল না। মান-সম্মান সব বুঝি ধূলোয় মিশে যাবে। সাগর খুব করে মহিলা-কে থামানোর চেষ্টা করছিল, কিন্তু মহিলাটা কিছুতেই কিছু না শুনে চিৎকার করে ডাকতে শুরু করলো, আঞ্জু আপা, আতিক ভাই,(মনোয়ারার আপা ও দুলাভাইয়ের নাম) তাড়াতাড়ি বের হন। মহিলাটা এমনভাবে হুলুস্থুল কান্ড ঘটিয়ে ফেলল যেনো, ডাকাত পাকড়াও করেছে একাই চেষ্টা করে। মহিলার চিৎকার চেঁচামেচিতে আশেপাশের আরো মানুষও জেগে গেল। প্রায় সব বিল্ডিং-এর মানুষ-ই তাদের বিল্ডিং থেকে দেখছে, আবার কেউ নিচে নেমে আসলো। ততক্ষণে বের হয়ে এলো, মনোয়ারার আপা দুলাভাই, সঙ্গে কাজের ছেলেটা। মনোয়ারা দরজার একপাশে দাঁড়িয়ে ভয়ে জড়সড় হয়ে আছে, যদি সাগর বলে দেয় আমাদের দেখা করার কথা, তাহলে আর রক্ষা নাই। আজই হবে এ বাড়ির শেষ ভাত আর আগামীকালের মধ্যেই পাঠিয়ে দেবে গ্রামের বাড়িতে। কয়েকদিন হলো লাভলু আর জালাল ভাইও বাসাতে নেই। ওোরা কি কাজে যেনো বাইরে গেছে। ওোরা থাকলেও হয়তো পার পাওয়া যেত, সত্য-মিথ্যা বলে। কিন্তু এখন আমি কি জবাব দেবো, কি বলবো, কেন এই জায়গায় এত রাতে এসেছি। সাগরের লজ্জায় মাথা হেট হয়ে আসছে। যারা দেখছে, তাদের অনেকেই সাগরকে চেনে। এই এলাকাতেই থাকে, টিউশনি করায়। বেশ ভদ্র বলেই জানে সবাই। কিন্তু চোর না ডাকাত, এ ভেবে এখন কেউই এগিয়ে আসবে না, এটা ভালভাবেই জানে সাগর। এদিকে মনোয়ারার আপা, এ মহিলাও সাগরের মুখ দেখে চিনে ফেলেছে, কারন পাশের বাসার জানালাতে দেখেছে অনেকবার। মাঝে মাঝে যখন ছাদে উঠে ঐই মহিলা তখন দেখেছে। মহিলাটা বেশ মোটা আর চেহারাটা ভয়ংকর, দেখতে কিছুটা দাজ্জাল মহিলাদের মতো। এদিকে মনোয়ারার দুলাভাই আশেপাশের সব বাড়ির মালিকদের ডেকে নিয়ে আসলো। সেখানে বিরাট জমায়েত হয়ে গেল। যে কেউ দেখলেই বলবে চোর ধরা পড়েছে। মহিলা বললো, এই ছেলে তুমি এখানে কেন এসেছো? আর প্রাচীর টপকিয়ে খাঁচার ভেতরে কেনো এসেছিলে?

সাগর শুধু বললো, এমনি।

রোমান্টিক স্যাড উপন্যাস সাগরের স্মৃতি । Romantic Sad Novel 'Sagorer Smriti' -সম্পূর্ণ পড়ুন


শুরু হয়ে গেল সোরগোল। কেউ বলছে পিটুনি দেন, নিশ্চয় চুরি করতে এসেছিল, কেউ বলছে পুলিশকে খবর দেন, থানায় নিয়ে যাক। তারপর আসল তথ্য বের হয়ে যাবে। সাগর পাথরের মতো দাঁড়িয়ে শুধু শুনছে আর ভাবছে যে যাই করুক বা বলুক, স্মৃতির কিছু হতে দিব না। কারন যাকে ভালবেসেছি, তার জন্য যত অপমান সহ্য করতে হয় করবো, কিন্তু এখানে কোনরকম সত্য প্রকাশ করা যাবেনা। যাকে বুক দিয়েছি তাকে কী করে পিঠ দেখাই। সেই রাতের বেলায় অনেক মানুষের ভীড়ে হঠাৎ-ই একটি কন্ঠ ভেসে আসলো, সাগর তুমি? সাগর মুখ তুলে তাকিয়ে দেখলো, মাহবুব ভাই। ভীষণ লজ্জা পেলেও এই মূহুর্তে কিছুটা স্বস্তি আসলো। কারন, মাহবুব ভাইকে সবাই সম্মান করে এবং সাগরকে ভালভাবেই চেনে। উনার বাড়িটা কয়েক বাড়ি পরেই, তবে একই রোডে পড়েছে। মাহবুব ভাইয়ের কথা শুনে সবাই বলে উঠল, আপনি চিনেন নাকি এই ছেলেকে? হ্যাঁ, চিনিতো! ওো কিছুদিন আগেও আমার ছেলে-মেয়ের প্রাইভেট টিউটর ছিল। খুব ভালো ছেলে। আচ্ছা সাগর, বলতো কি ব্যাপার? এত রাতে কেন তুমি এখানে এসেছো, আর খাঁচার ভেতরই বা কেন ঢুকেছিলে? সাগর জবাব আর কি দেবে। আবারো বলল, এমনি। তখন মাহবুব ভাই মনোয়ারাকে এক নজর দেখতে পেল এবং কিছু বুঝে নিল। তাই সবাইকে বললো, ঠিক আছে, এই ছেলের রিস্ক আমি নিলাম, পরে জেনে নেওয়া যাবে, আসল ঘটনা কি? তবে আপনারা নিশ্চিত থাকেন এই ছেলে চুরি ডাকাতি করতে আসেনি বা কখনো করবেও না, আমার বিশ্বাস। এই কথাতে সবাই বললো, ঠিক আছে। সাগরকে যেতে বললো, সাগর অনেক মানুষের ভীড় ভেঙে পা বাড়ালো, কিন্তু পা আর চলতে চাইছে না। এই এলাকায় দীর্ঘদিন আছি, সবাই আমাকে ভালো জানে, কিন্তু আজ সব মানুষ দেখলো, আমি চোরের বেশে ধরা খেয়েছি। কাল থেকে বাইরে বের হবো কী করে, আর কতজনে কত কি জিজ্ঞাসা করবে, কি তার জবাব দিব। নানান কথা ভাবতে ভাবতে বাসায় ঢুকলো। যাক, তবুও-তো মাহবুব ভাই চলে আসাতে স্মৃতি-কে সেফ করতে পারলাম।

এদিকে সাগরকে ছেড়ে দিয়ে মাহবুব ভাই আর মনোয়ারার আপা দুলাভাই ওোদের বাসায় ঢুকে ব্যাপারটা নিয়ে বিশ্লেষণ শুরু করতে লাগলো। আর মনোয়ার আপা মনোয়ারাকে বিভিন্নভাবে জিজ্ঞাসা করতে লাগলো যে, তুই কিছু জানিস কিনা বল? ইত্যাদি ইত্যাদি। মনোয়ারার আপা মনোয়ারাকে ছাদে ঘনঘন আসা যাওয়া-তে কিছুটা টের পেয়েছিল, মনোয়ারার সাথে ঐই ছেলেটার কিছু থাকলেও থাকতে পারে। তাইতো কাজের ছেলেটাকে আগে থেকেই খোঁজ রাখতে বলেছিল।

সাগর বাসায় এসে কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না। এতবড় লজ্জার ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি, তাই নিজেকে সামাল দেওয়াটা কঠিন হয়ে পড়লো সাগরের। ঈদের ছুটিতে সবাই বাড়ি চলে গিয়েছে, তাই ফজলুর সাথে শেয়ার করবে তারও কোনো উপায় নেই। নিজের কাছে খুব ছোট আর পাপী মনে হতে লাগলো। তবুও বারবার চিন্তা আসতে লাগলো, এতক্ষনে স্মৃতির না জানি কি হচ্ছে। ওোকে কিছু বলছে কি না.....। ভাবতে ভাবতে সকাল হয়ে গেল।

ঈদের দিন সবাই ব্যস্ত আনন্দ নিয়ে আর সাগর মনমরা হয়ে জানালায় মাথা ঠেকিয়ে আছে, আর একটু পরপর-ই ছাদের দিকে তাকাচ্ছে, স্মৃতির আসার অপেক্ষায়। কিন্তু আজ আর স্মৃতি আসছে না।

রোমান্টিক স্যাড উপন্যাস সাগরের স্মৃতি । Romantic Sad Novel 'Sagorer Smriti' -সম্পূর্ণ পড়ুন


এতক্ষণে রাজু গোসল খাওয়া শেষে সাগরের বাসায় এসে পড়ল। এমন অবস্থা দেখে বলল, কি..রে, তুই এখনও গোসল করিস নাই? নামাজে যেতে হবে, তারপর কত প্রোগ্রাম পড়ে আছে সেগুলোতে এ্যাটেন্ড করতে হবে, তাড়াতাড়ি কর। এতকিছু বলার পরও সাগরকে চুপ থাকতে দেখে, রাজু বললো, কিরে তোর কিছু হয়েছে? আজকের দিনেও মন খারাপ করে আছিস। সাগর রাজু-কে সব ঘটনা খুলে বলল। রাজু বলল, কেন তুই এত অপমান একা সইতে গেলি? সত্যিটা বলে দিতি। না, দোস্ত, তুইতো জানিস, আমি ওোকে অনেক ভালবাসি আর অপমান একা সয়েছি সমস্যা নেই, চিন্তা শুধু ওোর কোনো অসুবিধা হচ্ছে কিনা। রাজুরও বেশ মন খারাপ হয়ে গেল। সাগরকে রুমে রেখে একাই নামাজে চলে গেল। সাগর নাওয়া খাওয়া বাদ দিয়ে বিভিন্ন ভাবনায় চিন্তিত হয়ে পড়ল। স্মৃতির খোঁজ পেতে অস্থির হয়ে উঠল। প্রায় ২টা’র দিকে স্মৃতি বালতি ভর্তি কাপড় নিয়ে ছাদে আসলো, সাথে কাজের ছেলেটা। খুবই মন খারাপ স্মৃতির। ছেলেটার চোখ ফাঁকি দিয়ে আড়াল থেকে সাগর জিজ্ঞাসা করলো, তোমাকে কিছু বলেছে? চোখ ইশারায় ঘাড় নেড়ে স্মৃতি জানালো, হ্যাঁ।

প্রায় সপ্তাহ্ হয়ে গেল দুজন দুজনার মাঝে আর যোগাযোগ হয়না। দিনে ২/১বার স্মৃতি ছাদে আসে একান্তই কাজে। সঙ্গে কাজের ছেলেটা অথবা ঐই মহিলাটা থাকে। সাগর চিন্তায় পড়ে গেল। ঈদের পর আর লাভলু ফিরে আসে নাই, জালাল ভাইও মনোয়ারা বা সাগরের সাথে ঠিকমতো কথা বলেনা। কারন, তারা যে এই ঘটনা জানেন বা সহযোগীতা করেছেন সেটা যদি কেউ টের পেয়ে যায়। অবস্থা এমন হয়ে গেল যে, পাশাপাশি বাসাতে থেকেও কে কেমন আছে সে খোঁজ নেওয়ার কোনো উপায় নেই, দুজন দুজনার। জীবনের দুঃখ কষ্ট ভুলতে ভালবাসার মায়ায় ভুলে থাকতে চাইলাম, তাও হলোনা। কি করবে, কি হবে এসব ভাবতে ভাবতে পাগল প্রায় হয়ে গেল সাগর। মনে মনে খুঁজছিলো জালাল ভাইকে, যদি একবার দেখা পাই, তবে কোনো একটা উপায় বের করে ফেলবো। কয়েকদিন খুঁজতে খুঁজতে সেদিন সন্ধ্যার রাস্তায় পেয়ে গেল জালাল ভাইকে। সাগর দ্রুত পায়ে কাছে গিয়ে বলল-দুলাভাই আপনি মান-সম্মানের ভয়ে দূরে দূরে থাকছেন জানি, তবে একটা ব্যবস্থা করে দেন। আমি আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবো। জালাল সাহেব বললেন, দেখি কি করা যায়। সেদিন মনোয়ারাও আমার কাছে কেঁদে কেঁদে তোর কথা বললো, আমি বুঝতে পারছি তোরা একে অপরকে খুব ভালবাসিস। ঠিক আছে, তুই কোনো চিন্তা করিস না। বিষয়টা আমি মাহবুব ভাইয়ের সাথে কালকের মধ্যেই আলাপ করে কি করা যায় দেখি। আগামীকাল সন্ধ্যায় এখানে দেখা করিস।

সাগর কিছুটা হলেও স্বস্তি পেল। পরদিন সন্ধ্যায় জালাল সাহেবের কথা মতো দেখা করতে গেল সাগর। মনে দারুণ ভয় ও শংকা কাজ করছে। যেয়ে দেখলো জালাল ভাই সাথে মাহবুব ভাইও আসছে। সাগর সালাম দিয়ে বলল, আসেন আমরা কোনো রেস্টুরেন্ট-এ বসে আলাপ করি। সেখানে গিয়ে সাগর মাহবুব ভাইকে সব খোলামেলা বলল। মাহবুব সাহেব সব শুনে বলল, তুমি এত শিক্ষিত, আর ঐই মেয়েকে বিয়ে করবে কেন? মেয়েটা ভাল কিন্তু তোমার সোসাইটি তো মেনে নেবেনা। পরে দুজনই কষ্টে পড়বা। যদিও আতিক সাহেব ও তাঁর স্ত্রী আঞ্জু বেগম মনোয়ারাকে নিজেদের সন্তানের মতো করেই মানুষ করেছে, কিন্তু সমাজতো তাকে স্বীকৃতি দিবে পালক অথবা কাজের মানুষ হিসেবে। সাগর মাহবুব ভাইকে বলল, দেখেন ভাই, কে কি বলল বা বলবে, আমি জানিনা। তবে আমি মেয়েটাকে ভালবাসি আর ওকে সুখী করতে চাই, এটাই আমার শেষ কথা। এ ব্যাপারে আপনি না করবেন না, প্লিজ। পৃথিবীতে সবাই যদি সমান বা বেশি খোঁজে, তবে নিচের মানুষগুলো কি করবে, কোথায় যাবে। সমাজটাকে বিনির্মাণ করতে হলে সবাইকে মিশিয়ে নিয়ে অধিকার ভাগ করে নিতে হবে। সাগরের সব কথা শুনে মাহবুব সাহেব খুব খুশি হলেন। বললেন, ঠিক আছে আমি সাধ্যমতো চেষ্টা করবো। সেই রাতেই মাহবুব সাহেব মনোয়ারার দুলাভাই আতিক সাহেবের সাথে বিষয়টা নিয়ে বিস্তারিত আলাপ করলো। আতিক সাহেব তার স্ত্রীর সাথে কথা বলে জানাবে বললো। এ কথা শুনে আঞ্জু বেগমেরও একই কথা, এত শিক্ষিত ছেলে, কেন মনোয়ারাকে বিয়ে করবে? আর এসব আবেগ মাত্র। দু’দিন পর ঠিকই ঐই ছেলে মনোয়ারাকে ছেড়ে চলে যাবে, ইত্যাদি ইত্যাদি। তাছাড়াও আঞ্জু বেগমের মনে সন্দেহ ঢুকে গেল যে, ছেলেটার চরিত্র ঠিক আছে কি না? আসলেই লেখাপড়া জানে কি না? তাই আশেপাশের মানুষদের কাছ থেকে খোঁজ-খবর নেওয়া শুরু করলো। এটা হওয়া স্বাভাবিক, কারন দুজনের মাঝে অসম ব্যবধান এই চিন্তা ভীড় করাবেই। কয়েকদিন পার হতেই আতিক ও আঞ্জু সাহেব দেখলো, মনোয়ারা কেমন হয়ে যাচ্ছে, ঠিকমতো খাচ্ছে না, ঘুমাচ্ছে না, কথাও আগের মতো শুনছে না। সবকিছু দেখে দুজন মিলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিল, ব্যাপারটা নিয়ে উভয়পক্ষের অভিভাবকদের সাথে কথা বলা দরকার। যদিও মনোয়ারার অভিভাবক তারাই, তারপরও ওোর ভাইয়েরা আছে, তাদের সামনেই সাগরের অভিভাবকের সাথে কথা বলা ভালো। পরে মাহবুব ভাইয়ের মাধ্যমে সাগরকে জানিয়ে অভিভাবক আনতে বলা হলো। সাগর, মনোয়ারা খুব খুশি হলো। সাগর তাড়াতাড়ি ওোর বড় আপাকে খবর দিল। গার্জেন হিসেবে ঐই বড় আপাই সাগরের সব। মায়ের মতো আগলে রাখে ওোকে। দিনক্ষণ ধার্য্য করে উভয় পক্ষই বসলো। সাগর তার আপার সাথে মনোয়ারার ব্যাপারে সবকিছু বললে, সেও অবাক, তা কি করে হয়? এই অসম সংসার কি সুখের হবে? সাগরের রুমে ফজলু, আকতার মিলে আলাপ করছিল। তবুও সাগরের অনুরোধে, যদি ওোরা সুখী হয়, এসব ভেবে মাহবুব ভাইকে সাথে নিয়ে ফজলু, আকতার আর সাগরের বড় বোন মনোয়ারার আপা দুলাভাইদের বাসায় গেল। আলোচনাতে মোটামুটি দুপক্ষ-ই রাজি না। আবেগের বশে তারা হয়তো এসব করছে, কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। পরে তারা বিছিন্ন হয়ে যাবে। সাগর বাসায় বসে অস্থির, কি হয় কি হয়, জানিনা। মনোয়ারা সবই শুনছে তাদের আলোচনা। যখন বুঝতে পারলো, আলোচনা সফল না হয়েই দুপক্ষ উঠে যাচ্ছে, তখন সাহস করে তাদের সামনে গিয়ে কান্নাকাটি আরম্ভ করে দিল। এই দেখে মনোয়ারার বড় ভাইসহ সবাই ওোকে জিজ্ঞাসা করলো, সাগর কিছু করে না, তোমারওতো কিছু নাই, তবে বিয়ের পর তোমরা খাবা কি আর থাকবা কোথায়? মনোয়ারা তখন মাথা নিচু করে একটু জোরেই বলে উঠল, গাছ তলায় থাকবো আর না খেয়েই আমরা থাকবো। আপনারা আমাদের বিয়ে দিয়ে দেন, সাগরকে বলব তাড়াতাড়ি চাকরির ব্যবস্থা করে নিতে। যতদিন চাকরি না পায়, ততদিন না হয় আমি এখানেই থাকবো। তবুও আমরা নিশ্চিন্ত থাকবো। যাদের সামনে কখনই কথা বলার সাহস হয়নি মনোয়ারার, আজ ভালবাসার সাহসে সব বলে ফেললো। এসব শুনে মাহবুব ভাই জোর সাপোর্ট দিয়ে বলল, ঠিক আছে আপনারা কোনো অমত কইরেন না। ওোদের বিয়েটা না হয় দিয়েই দিই, বাকিটা আল্লাহ ভরসা। মাহবুব ভাইয়ের কথাতে কেউ আর অমত করল না। মহাখুশি মনোয়ারা। সাথে সাথে দৌড়ে ছাদে উঠে সাগরকে ইশারায় বললো, সবাই রাজি হয়েছে। একথা শুনে সাগরও মহাখুশি।  

রোমান্টিক স্যাড উপন্যাস সাগরের স্মৃতি । Romantic Sad Novel 'Sagorer Smriti' -সম্পূর্ণ পড়ুন


ইসলামিক  শিক্ষামূলক গল্প উপন্যাস পড়ুন এখানে               

চলবে.......... রোমান্স ও বাস্তবতার গল্প শুনতে ৯ম পর্বে চোখ রাখুন।                     অন্যান্য পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ