আদর্শ শিক্ষক এর মাপকাঠি -পার্ট ২। ‍how to became an ideal teacher Part 2



মূল লেখা শুরু আগে একটা আবেদন : নতুন আসা ও অনেকদিন ধরে শিক্ষকতা করতে থাকা সকল শিক্ষকদের প্রতি বিনীতভাবে অনুরোধ করি, এই সমাজটাকে বিনির্মাণের জন্য যার যার জায়গা থেকে সাধ্যমতো ভূমিকা রাখেন। প্লিজ, প্লিজ, প্লিজ। নইলে বর্তমান সমাজের যে পরিস্থিতি, এভাবে চলতে থাকলে আপনার আমার সন্তান বা তার পরবর্তী প্রজন্মগুলো আপনাকে আমাকে কোনভাবেই ক্ষমা করবে না। কারন আমরা যেভাবে শিক্ষক, ঈমাম, ডাক্তার, মন্ত্রী ইত্যাদি ইত্যাদি হয়ে যত নিকৃষ্ট পর্যায়ে নেমে গেছি তাতে করে এপারে ওপারে ক্ষমা পাওয়ার বা ভাল থাকার কোন রাস্তা খোলা থাকছে বলে মনে হয় না আমার। খেয়াল করলেই দেখবেন, একজন নেশাগ্রস্থ, চোর, বদমাইশ বা অশিক্ষিত লোকেরা যে নেগেটিভ আচরণ করে থাকে, যেমন: মিথ্যা বলা, ছল-চাতুরী করা, কাউকে কথা দিয়ে কথা না রাখা, মানুষকে মূল্যায়ণ না করা, ইত্যাদি ইত্যাদি, তাদের থেকে বরং আমরা শিক্ষক তথা শিক্ষিত সমাজ আরো কয়েকধাপ এগিয়ে। ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে আমরা।

আদর্শ শিক্ষক এর মাপকাঠি  -পার্ট  ২। ‍how to became an ideal teacher Part 2

 তাই আমার আহ্বান অন্ততঃ আমরা যারা শিক্ষকগোষ্ঠী তাঁরা মিথ্যা, ধোকাবাজী, ছল-চাতুরী, কারো পিছে লেগে থাকা, কথা দিয়ে কথা না রাখা এসব ছেড়ে অন্ততঃ ন্যূনতম বেঁচে থাকার পরিবেশ নিশ্চিত করে রেখে যাই। ভেবে দেখেন আমরাতো এ সমাজের মডেল, উচ্চ মর্যাদার আসনে বসে আছি, কিন্তু মর্য়াদার আসনে বসে যে সমস্ত নিকৃষ্ট জানোয়ারের মতো কাজ করে যাচ্ছি, এতে আমাদের সৃষ্টিকর্তা লজ্জায় পড়ে যাচ্ছেন। তাই আসুন ১-কে ১-ই বলি, তাকে ২/৩ বানানোর চেষ্টা না করি। কারন একটা ১-কে ২/৩ বানাতে কত ১-কে যে বিনষ্ট করে ফেলছি, তা হিসেবের বাইরে। আসুন , সত্য বলে জীবন দিই মিথ্যার প্রাসাদ ছেড়ে। কারন আমাদের রবের কথায় মহাগ্রন্থ পবিত্র ‘আল-কোরআন’ সৃষ্টি আর আমাদের নবীর মুখের বাণীতে ‘হাদিস তৈরি। তাঁদের-ই বান্দা আর উম্মত হয়ে আমাদের মুখের জবাণ.......... ভাবতেই অবাক লাগে।

আদর্শ শিক্ষক এর মাপকাঠি।how to became an ideal teacher:

মূল লেখা
আদর্শ শিক্ষক এর মাপকাঠি  -২, আদর্শ শিক্ষক জাতির বিবেক, আদর্শ শিক্ষক হওয়া জরুরি, আদর্শ শিক্ষক হওয়ার নিয়ম ও কলাকৌশল, আদর্শ শিক্ষক হতে হলে যে যে পদ্ধতি জানা প্রয়োজন
আদর্শ শিক্ষক
ভাল শিক্ষার্থী (স্টুডেন্ট) মানেই ভাল শিক্ষক নয়

সম্মানিত পাঠক লেখার শুরুতেই স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, আমার লেখা আদর্শ শিক্ষকের মাপকাঠি আর্টিকেলটি ২টি খন্ডে বিভক্ত রয়েছে। যার ১ম খন্ডে বর্ণনা আছে একজন শিক্ষক ব্যাকএন্ড-এ কী কী কৌশল শিখে নিবেন এবং তা রপ্ত করে ফ্রন্টএন্ড-এ প্রয়োগ করবেন। আর এই দুই এন্ড-এর সমন্বয়ে বাস্তবিক বা পেশাগত জীবনে একজন শিক্ষক আদর্শবান শিক্ষক হিসেবে সহজেই প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন। যদিও এ সমাজ শিক্ষকতাকে পেশা বলতে চায় না। (কেন বলতে চায় না বা বলে না- সেটা আমার লেখা অঘোষিত বেকারত্ব-টিচিং প্রফেশন পড়ে বুঝে নিতে পারেন)। যাই হোক মূল আলোচনা শুরুর আগে অবশ্যই আপনাকে বলবো এই খন্ডটি পড়ার পূর্বে আপনি “আদর্শ শিক্ষকের মাপকাঠি”-খন্ড ১ পড়ে নিবেন। নয়তো আমার লেখাটা অস্পষ্ট বা বোঝার ভ্রান্তি থেকে যেতে পারে।
        তো চলুন, জেনে নেই ফ্রন্টএন্ড বলতে কী বোঝাতে চেয়েছি? অভিনয় শিল্পীরা যেমন ব্যাকএন্ড থেকে সব শিখে-পড়ে ক্যামেরার সামনে প্রয়োগ করে এবং মূল উদ্দেশ্য বাস্তবিক পর্যায়ে তুলে ধরে ঠিক তেমনি একজন আদর্শবান শিক্ষকও নিজেকে প্রস্তুত করে বাহ্যিকভাবে শিক্ষার্থীর সামনে নিজেকে পজেটিভলি উপস্থাপন করাটাই ফ্রন্টএন্ড বলছি। একজন শিক্ষক যখন ব্যাকএন্ড-এ প্রস্তুতি নিবে তখন তাঁর মধ্যে নিম্নবর্ণিত পরিবর্তনগুলো স্বাভাবিকভাবে চলে আসবে— আর তাকে দেখে অণ্যরা বুঝতে পারবে

আদর্শ শিক্ষক এর মাপকাঠি।how to became an ideal teacher’ কেমন হতে হবে।

  • সে সুরুচিবান ব্যক্তিত্বসম্পন্ন হয়ে উঠবে।
  • সজীব মানসিকতা’র অধিকারী হয়ে উঠবে।
  • মৌলিকতাবোধ জাগ্রত হবে, অর্থ্যাৎ কনফিউশন দূর হয়ে যাবে।
  • একজন মানুষ হিসেবে যতটুকু নমনীয়তা প্রয়োজন, তাঁর মধ্যে জাগ্রত হবে।
  • সামাজিকতা চলে আসবে।
  • উদ্দীপনা বেড়ে যাবে। যা নিজেকেতো বটেই, শিক্ষার্থী বা সমাজকে বদলে দিতে পারবে।
  • মার্জিত পোষাক পরিধান করতে শুরু করবে যা শিক্ষার্থীদের অনুকরনীয় হবে।
  • নিজেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সূস্থ্য রাখতে চেষ্টা করবে, যা শিক্ষার্থীদের ইতিবাচক কাজে দেবে।
  • অপ্রয়োজনীয় কঠোরতা বা গম্ভীরতা দূর হয়ে রসিকবোধ-এর একজন মানুষ হয়ে উঠবে। (রসিকবোধ বাড়াতে সবার জন্য ব্লগ-এ যান এবং রসিকতার নাটক, সিনেমা, সংবাদ দেখুন)
  •  নেতৃত্ব দেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠবে এবং শিক্ষার্থীদেরকেও নেতৃত্বদানে উদ্বুদ্ধ করবে।
  • সে জ্ঞান অর্জনের জন্য অধ্যবসায়ী হয়ে উঠবে।
  • তাঁর মধ্যে উপস্থিত বুদ্ধি অর্জন ও প্রয়োগ করার কৌশল আসবে।

 এরপর একজন শিক্ষক যদি নিম্নবর্ণিত নিয়মগুলো সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারেন, তবে তিনি অবশ্যই আদর্শ শিক্ষক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন এবং অন্যদের জন্য অনুসরণীয় হয়ে থাকবেন আদর্শ শিক্ষক এর মাপকাঠি।how to became an ideal teacher’ -কেমন।

আদর্শ শিক্ষক এর মাপকাঠি  -২, আদর্শ শিক্ষক জাতির বিবেক, আদর্শ শিক্ষক হওয়া জরুরি, আদর্শ শিক্ষক হওয়ার নিয়ম ও কলাকৌশল, আদর্শ শিক্ষক হতে হলে যে যে পদ্ধতি জানা প্রয়োজন
আদর্শ শিক্ষক

Ø আপনি যদি শিক্ষক হিসেবে নিজেকে চেনাতে চান, তবে সঠিক সময়ে বাড়ি বা বাসা থেকে বের হন, বের হওয়ার সময় সেদিনের জন্য যা যা প্রয়োজন হবে ক্লাস বা ক্লাসের বাইরে, সেগুলো সঙ্গে নিয়ে নেন। মনে রাখবেন- ভুলে গেছি, উচিৎ ছিল, না হলেও চলবে, এসব বাক্য শিক্ষকদের জন্য নয়।
  1. Ø অবশ্যই ক্লাস শুরুর কমপক্ষে আধাঘন্টা পূর্বে আপনার কর্মস্থলে উপস্থিত থাকবেন, যদি পথে কোনো সমস্যা হয় অবশ্যই যথাসময়ে আপনার প্রধানকে অবহিত করবেন যেন আপনার অসুবিধার কারনে প্রতিষ্ঠান কোন অসুবিধায় না পড়ে।
  2. Ø প্রতিষ্ঠানে ঢুকেই সর্বপ্রথম আপনি আপনার উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হাজিরা স্বাক্ষর বা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থানুযায়ী লিপিবদ্ধ করুন। এরপর নিজেকে প্রস্তুত করুন ক্লাসে উপস্থাপন করার জন্য। তাড়াহুড়ো করে পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়া একজন আদর্শ শিক্ষক কখনই ক্লাসে যেতে পারেন না, এটা অপরাধের সামিল।
  3. Ø ক্লাসের সময় হলে কোনপ্রকার বিলম্ব ছাড়া প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ নিয়ে ক্লাসে চলে যেতে হবে। ক্লাসে যাবার পর শিক্ষার্থীদের-কে দিয়ে এটা-সেটা আনানো যাবে না। এ অভ্যাস আদর্শবান শিক্ষকের থাকেনা বা ‘আদর্শ শিক্ষক এর মাপকাঠি।how to became an ideal teacher’ -এর মধ্যে পড়েনা।
  4. Ø ক্লাসে ঢুকেই আপনি শুভেচ্ছা বিনিময় করুন এবং আই কন্ট্রাক্ট এর মাধ্যমে প্রতিটি শিক্ষার্থীর উপর নজর বুলিয়ে নিন ও মৌন শাসন প্রয়োগ করুন। যেমন : অগোছালো কিছু থাকলে শিক্ষার্থীদের-কে দিয়ে করিয়ে নিন, দুষ্টু শিক্ষার্থীদেরকে রি-অ্যারেঞ্জ করে নেওয়া। এসবের সঙ্গে সঙ্গে পুরো ক্লাসটা একবার ঘুরে নিন। এতে আপনার ক্লাস চালাতে সুবিধা হবে।
  5. Ø এখন আপনি আপনার নির্দিষ্ট স্থানে দাঁড়ান। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পূর্ববর্তী ক্লাসের পড়া সম্বন্ধে জানতে চান, বাড়ির কাজ থাকলে আদায় করুন এবং গতক্লাসের পড়া থেকে কয়েকজনের কাছ থেকে ফিডব্যাক নিন। অল্প সময়ের জন্য আগের ক্লাসের বিষয়বস্তুর সারাংশ বলে দিন, এতে করে যারা উপস্থিত ছিল তাদের রিভাইজ হয়ে যাবে এবং যারা অনুপস্থিত ছিল তাদের ধারনা চলে আসবে।
  6. Ø এখন আপনি আজকের ক্লাসের বিষয়বস্তু পড়ানোর জন্য পরিবেশ তৈরি করুন। যেমন : যে বিষয়টি আজ আলোচনা করবেন তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে গল্প দিয়ে শুরু করুন, এবং এ থেকে কী বোঝা গেল তা শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চান। দেখবেন তারা সবটা না বুঝলেও কিছু কিছু আইডিয়া দেবে। এতে করে আপনার ঐ বিষয়বস্তু শেখানো সহজ হয়ে যাবে। কিছু শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ধারনা নেওয়ার পর আপনি লেখার বোর্ডে বড় বড় অক্ষরে বিষয়ের শিরোনাম লিখে ফেলুন। অবশ্যই মনে রাখতে হবে বোর্ডে লিখবার সময় মুখে বলতে হবে আর লিখতে হবে।
  7. Ø এ পর্যায়ে বিষয়বস্তু নিয়ে প্রয়োজনীয় আলোচনা করুন এবং বোর্ডের ব্যবহার করুন। মনে রাখবেন, আপনি যখন আলোচনা করবেন, তখন অবশ্যই বিষয়সংশ্লিষ্ট উপকরণ ব্যবহার করবেন। এতে শিক্ষার্থী বাস্তব ধারনা পাবে এবং খুব দ্রুত বিষয়বস্তু আয়ত্বে আনতে পারবে, সেই সাথে শিক্ষক হিসেবে আপনারও শিখন শেখানো সহজ হবে। এরপর শিক্ষার্থীদের-কে দিয়ে কাজ করিয়ে নিন এবং আপনি মনিটরিং করুন। এটাকে বলে অংশগ্রহণমূলক শিখন শেখানো পদ্ধতি। বর্তমানে পূর্বের মতো বক্তৃতা পদ্ধতি আর শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে না, যেখানে শিক্ষক শুধু বক্তব্যের মাধ্যমে শেখাতো আর শিক্ষার্থীরা শুনতো। আগের ঐই পদ্ধতিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়ের মাঝেই বিষাদতা চলে আসতো। আপনি আপনার পছন্দেমতো যেকোন অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতির মাধ্যমে সেদিনের পড়া শিখিয়ে ফেলুন।
  8. Ø শিক্ষার্থীদের কাজ শেষ হলে তাদের কাজ দেখুন গুরুত্ব সহকারে। যার বা যাদের কাজ ভাল হবে তাদেরগুলো সামনে তুলে ধরুন এবং অন্যদেরকে এভাবে করার উৎসাহ দিন। তবে কোনভাবেই অন্যদেরটা হয়নি বা কি করেছো এসব, এধরনের মন্তব্য করবেন না। তাহলে ঐইসব শিক্ষার্থীরা নিজের প্রতি বিশ্বাস হারাবে ও আপনার ক্লাসের প্রতি অবহেলা চলে আসবে। তখন একজন শিক্ষকের জন্য ‘আদর্শ শিক্ষক এর মাপকাঠি।how to became an ideal teacher’ -এর নৈতিকতা হারাবে।
  9. Ø খুব বেশি গম্ভীরতা দেখাবেন না, হাসি-খুশি থাকার চেষ্টা করবেন। মাঝে মাঝেই প্রাসঙ্গিক গল্প করবেন এবং রুচিসম্মত রসিকতা করবেন। লেখাপড়া কঠিন বা এ বিষয়টা জটিল, কম নম্বর আসে, শিখতে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয় বা এই বিষয়ে ফেল করে বেশি, এধরনের বাক্যগুলি ব্যবহার না করে বলবেন এই বিষয়টার মতো সহজ সাবজেক্ট-ই হয় না, সামান্য পড়লেই পাস করা যায়, খুব-ই মজার সাবজেক্ট ইত্যাদি ইত্যাদি ইতিবাচক মন্তব্য করবেন।
  10. Ø এ পর্য়ায়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাসের কাজ দেখা শেষে, আপনি পুনরায় বিষয়বস্তুর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সারাংশ বলে দিন। বলা শেষে হাসিমুখে শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চান, আজকের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে কারো কোনো প্রশ্ন আছে কি না ? কেউ প্রশ্ন করলে রেগে গিয়ে ধমক দিবেন না। বলবেন না যে, এতক্ষণ কী শুনলে ? বা কী শেখালাম ? ইত্যাদি ইত্যাদি বললে শিক্ষার্থীরা ভয়ে আর প্রশ্নই করবে না আর আপনার ক্লাসেও তারা মনোযোগী থাকবে না। কোনো শিক্ষার্থী প্রশ্ন করলে নিজে উত্তর না দিয়ে অন্য শিক্ষার্থীর দ্বারা উত্তর আদায় করে নিন। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়-ই লাভবান হবে।
  11. Ø এ পর্য়ায়ে সেদিনের শিখন শেখানোর উপর ফিডব্যাক আদায় করুন। ক্লাসের জন্য বরাদ্দ সময় থাকা সাপেক্ষে আপনি ফিডব্যাক নিতে থাকুন। যখন বুঝবেন আমার শেখানো প্রায় সফল, তখন বাড়ির কাজ দিয়ে দিন। অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে বাড়ির কাজ যেনো অতিরিক্ত না হয়। নিয়ম হচ্ছে যতটুকু সেদিনের ক্লাসে পড়ানো হয়েছে, তা থেকেই বাড়ি বা বাসা থেকে লিখে আনতে বলা। প্রয়োজন হলে সামান্য কিছু বাড়তি দেওয়া যেতে পারে, সেটা অবশ্যই সেদিনের শেখানো বিষয়বস্তুর সাথে মিল থাকতে হবে। বাড়তি কাজ দিলে শিক্ষার্থী করে আনবে না। মনে রাখবেন বিনোদনের মাধ্যমে শেখানোই হচ্ছে একজন সফল ও আদর্শ শিক্ষকের অন্যতম গুণাবলি। অতিরিক্ত পড়া দিলে পড়ার চাপে শিক্ষার্থীর একঘেয়েমিয়তা চলে আসে, ফলে সে মানসিক চাপে ভূগতে থাকে। আর এধরনের চাপের ফলেই শিক্ষার্থী ঝরে পড়ে।
  12. Ø বাড়ির কাজ সবাই লিখেছে কি না নিশ্চিত হয়ে, লেখার বোর্ড পরিষ্কার করে ক্লাস শেষের ঘন্টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে হাসিমুখে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিদায় নিন। মনে রাখবেন, সময়মতো ক্লাসে ঢোকা আর বাহির হওয়া একজন আদর্শ শিক্ষকের অন্যতম গুণ বা বৈশিষ্ট্য। অনেকেই মনে করেন ক্লাস শেষের ঘন্টা বাজা’র পরও ক্লাসে থাকলে নিজের ব্যক্তিত্ব বাড়ে, মোটেও তা নয়, বরং এটা দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়।
  13. এর বাইরেও একজন আদর্শ শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সাথে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিবেন, মাঝে-মধ্যে নিজে খেলাধূলা করবেন এবং শিক্ষার্থীদেরকেও খেলাধূলাতে আগ্রহী করে তুলবেন। এতে নিজের শারীরিক সূস্থতা যেমন নিশ্চিত হবে সেইসাথে শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করলে প্রতিষ্ঠানেরও সুনাম বৃদ্ধি পেতে থাকবে।

 উপরোক্ত বিষয়গুলোআদর্শ শিক্ষক এর মাপকাঠি, খন্ড-১ মিলিয়ে যেসকল গাইড লাইন দেওয়া হলো সেগুলো মেনে চললে একজন শিক্ষক সত্যিকারের আদর্শবান শিক্ষক হয়ে উঠবেন এটা নিশ্চিত।


ধন্যবাদান্তে ;
                         


লিখেছেন : মসনদ সাগর
শিক্ষক, মাস্টার ট্রেইনার, লেখক ও ফ্রিল্যান্সার, 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ