আদর্শ শিক্ষক এর মাপকাঠি -১। ‍how to became an ideal teacher Part 1



আদর্শ শিক্ষক এর মাপকাঠি  -১, আদর্শ শিক্ষক জাতির বিবেক, আদর্শ শিক্ষক হওয়া জরুরি, আদর্শ শিক্ষক হওয়ার নিয়ম ও কলাকৌশল, আদর্শ শিক্ষক হতে হলে যে যে পদ্ধতি জানা প্রয়োজন
আদর্শ শিক্ষক

আদর্শ শিক্ষক এর মাপকাঠি।how to became an ideal teacher

: 
      আমি যখন কোথাও শিক্ষক সম্বন্ধে কথা বলি বা লেখার চেষ্টা করি, তখন সবসময়-ই আগে বলি বা লিখি— “একজন ভাল শিক্ষার্থী (স্টুডেন্ট) মানেই ভাল শিক্ষক নয়” শিক্ষক শব্দটা আলাদা একটা মর্যাদা বহন করে, এ শব্দের সাথে জড়িত অনেক ভারত্ব আর বহু ত্যাগ তিতিক্ষা ও পাওয়া না পাওয়ার অনেক গল্প কাহিনী। যাই হোক আমি এখানে পাওয়া না পাওয়ার গল্প লিখব না। এ নিয়ে বিস্তারিত আমার লেখা অঘোষিতবেকারত্ব-টিচিং প্রফেশন” পড়ে নিতে পারেন।


একজন আদর্শ শিক্ষক বলতে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ একজন মানুষের কথায় বোঝায়। কারন, শব্দ এখানে দু’টি, একটি আদর্শ অন্যটি শিক্ষক। এই শব্দ দু’টির একীভূত মিলন পৃথিবীর অন্য যেকোনো শব্দ, বাক্য, অনুচ্ছেদ বা পরিচ্ছেদ থেকে পুরোপুরিই আলাদা। যেহেতু আলাদা এবং এর গভীরতা গভীরতম, তাই এক আর্টিকেলে ব্যাখ্য দেওয়া সম্ভব হলেও যুক্তিসঙ্গত মনে করছি না আমি। কেন মনে করছি না, আশা করছি ‘আদর্শ শিক্ষক এর মাপকাঠিখন্ড-১খন্ড-২ পড়লে পরিষ্কার হয়ে যাবেন। (২য় খন্ড পড়ুন) আমার কাছে মনে হয় একজন শিক্ষকের জীবন দু’টি পর্বে বিভক্ত হওয়া বাঞ্চনীয়। ১। ব্যাকএন্ড ও ২। ফ্রন্টএন্ড। আমি ১ম খন্ড অর্থ্যাৎ এখানে ব্যাকএন্ড নিয়ে লিখব এবং যথারীতি ২য় খন্ডে ফ্রন্টএন্ড নিয়ে লিখব।
        আসুন, আগে জেনে নিই ব্যাকএন্ড বলতে আমি কী বোঝাতে চাইছি। ধরুন একটি সিনেমা, যেখানে ক্যামেরার সামনে নায়ক-নায়িকাসহ ঐই সিনেমার সমস্ত অভিনয় শিল্পীরা তাদের পারফর্ম করছে বা করে। এই পারফর্ম প্রকৃতপক্ষে অভিনয়, যা বাস্তবতাকে বহন করে। এই অভিনয়কে যারা ক্যামেরার সামনে শিল্পীদের দিয়ে করিয়ে নিচ্ছে, প্রকৃতপক্ষে সেটাই মূল, কারন অভিনয় যারা করে, তারা শুধুমাত্র শিখিয়ে দেওয়া কাজগুলোই করে থাকে। আর এই শিখিয়ে দিতে যা যা করতে হয় সবই ক্যামেরার পেছনের মানুষদের অবদান বা পরিশ্রম। আমি ক্যামেরার পেছনের গল্পকেই ব্যাকএন্ড বলছি, আর ব্যাকএন্ড থেকেই বেরিয়ে আসে 

আদর্শ শিক্ষক এর মাপকাঠি।how to became an ideal teacher


        আমার বক্তব্য মতে, শিক্ষকদেরও ফ্রন্টএন্ড-এ বা সামনে অভিনয় করার জন্য অবশ্যই ব্যাকএন্ড বা পেছনে রেডি হওয়া জরুরি। যা, সমাজের মানুষের কাছে শিক্ষক হিসেবে মান-মর্যাদা বা প্রতিষ্ঠা পাওয়ার সুযোগ বাড়াবে। তাহলে শুরু করি মূল আলোচনা। একজন শিক্ষককে আদর্শবান হতে হলে আগে তাকে জানতে হবে শিক্ষার বাস্তবিক সংজ্ঞা।

শিক্ষার সংগা : শিক্ষা হচ্ছে একজন মানুষের কাঙ্ক্ষিত আচরণের ইতিবাচক পরিবর্তন। সতর্কতার সাথে শব্দগুলোকে মাথায় নিতে হবে। এখানে ‘কাঙ্ক্ষিত আচরণ’ ও ‘ইতিবাচক পরিবর্তন’ এই দুই পদযুগলের মমার্থ বুঝলেই বেশ পরিষ্কার হওয়া যাবে। একটি সমাজে সবার আচরণ এক হয়না বা এক হওয়ার আশাও সবাই করেনা, কারন সবারই বিভিন্নতা বিদ্যমান। তাই কাঙ্ক্ষিত আচরণ বলতে সমাজের ইতিবাচক সাফল্য আনতে একজন মানুষের আচরণিক পরিবর্তন-কে বোঝায়। পাশাপাশি ইতিবাচক পরিবর্তন, এই কথার অর্থ, একজন ব্যক্তি জন্ম থেকেই সে সমাজে কি দরকার সেটা সে জানে না। ধীরে ধীরে বড় হয় এবং লেখাপড়া শেখে, এই শেখাতে তার আগের ধ্যান-ধারণা যায় থাক, সেটার বদল বা সমন্বয়ে আভ্যন্তরীণ পরিবর্তন আনা যা বাহ্যিকভাবে পরিলক্ষিত হয়।
        এখন জানা যাক, একজন শিক্ষক আদর্শবান হতে হলে তাঁর ব্যাকএন্ড-এ কী কী রেডি করতে হবে, যা ফ্রন্টএন্ড-এ অভিনয়ের মতো ফুটিয়ে তুলবে।
সর্বপ্রথম মানসিকতা রেডি করা— 
একজন সাধারন মানুষের মানষিকতা আর শিক্ষকের মানষিকতা অবশ্যই আলাদা হতে হবে। কারন সাধারনেরা শেখে আর শিক্ষক তাদের শেখায়। সুতরাং, একজন শিক্ষককে মানষিকতা সম্বন্ধে ভাল জ্ঞান রাখতে হবে এবং বিচার বিশ্লেষণপূর্বক শিখতে চাওয়া মানুষদের মানষিকতার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। শিক্ষকের মানষিকতা দিয়ে কখনো সমাজের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারবেনা উল্টোদিকে অন্যান্যদের দ্বারা নেতিবাচক প্রভাব পড়াটা স্বাভাবিক। আরো মনে রাখতে হবে, অন্যদের দ্বারা বড় বড় ক্ষতিও মানুষ আলোচনায় আনলেও সমালোচনা করবে খুব কম। কিন্তু একজন শিক্ষক দ্বারা ন্যূনতম ক্ষতি সমাজ মেনে নিবে না। কারন তার গা’য়ে শিক্ষক তকমা লেপটে আছে। তাই শিক্ষার্থীদের সামনে দাঁড়ানোর আগে একজন শিক্ষককে মানসিকতা প্রস্তুত করে নিতে হবে।

দ্বিতীয়ত, আদর্শতা

আদর্শ শিক্ষক এর মাপকাঠি।how to became an ideal teacher

 মানেই আদর্শের অফুরন্ত ভান্ডার। এ কথার সত্যতা সবাই মানে। কারন, প্রবাদ বলে ‘শিক্ষক হচ্ছে মানুষ গড়ার কারিগর’, সুতরাং কারিগরের নিকট সাধারন মানুষ কারিগরিত্ব দেখতে চাইবে এটাই স্বাভাবিক। একজন শিক্ষককে সঠিক আদর্শ মেনে চলতে হবে। সঠিক আদর্শ কেন বললাম ? কারন আমরা এখন দুধ, মধু সবকিছুই খাঁটি খুঁজে মরছি। অথচ এইসবগুলি মানুষ তৈরি করেনা, সবই প্রকৃতির দান। তবুও খাঁটি দুধ পেতে পেরেশানি, খাঁটি মধু আনতে সন্দেহের বেড়াজাল। তাই আমরা এখন আদর্শ, আদর্শ করে ১০০% নিশ্চয়তা দিচ্ছি, কিন্তু সে বেলায় অন্তঃসারশূন্য। তেমনি শিক্ষক নামে বেশ ধরে আদর্শকে পায়ের তলানীতে ফেলে দিব্বি শিক্ষাবীদ সেজে সমাজকে ধোকা দিয়ে যাচ্ছে অনেকেই। তাই আদর্শবান শিক্ষক হতে আপনাকে আগে শিক্ষার্থী বা সমাজের সামনে আসার আগে ব্যাকএন্ড-এ আদর্শতার প্রতিশ্রুতি মিলিয়ে নিতে হবে।
 তৃতীয়ত, মানুষ হতে হবে
প্রাণ থাকিলে প্রাণী হয় কিন্তু মানুষ হওয়া যায় না। অর্থ্যাৎ মানুষের পেটে জন্ম নিয়ে শারীরিক কাঠামো মানুষের মতো দেখতে হলেই মানুষ হওয়া যায় না, শিক্ষকতো অবশ্যই না। পৃথিবীজুড়ে শতশত কোটি মানুষ আছে, এর মধ্যে শিক্ষক নামের যে মানুষগুলি রয়েছে তাঁদেরকে বিশ্ব আলাদা চোখে দেখে। যেমন করে অবুঝ অবস্থায় অনেকে মনে করে, পুলিশ, র‌্যাব, আর্মি’রা বুঝি মানুষ হয় না, তারা বুঝি অন্য গ্রহের অন্য প্রাণী। ঠিক তেমনি শিক্ষকদের এ সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে অবশ্যই আলাদা প্রাণীর মতই নিজেকে আলাদাভাবে চেনাতে হবে, আর সেটা একমাত্র সম্ভব প্রকৃত মানুষ হয়ে। একজন শিক্ষক কখনই মিথ্যা, চাতুরী, ছলনার আশ্রয় বা সত্যকে পাশ কাটিয়ে যেতে পারেনা। পক্ষপাতিত্ব করতে পারেনা, কোন শিক্ষার্থীর যেকোন ব্যাপারে। অবশ্যই সে পবিত্র দায়িত্ব পালনে ব্রত মর্মেই সকল শিক্ষার্থী তার কাছে আমানত স্বরূপ। সুতরাং মাথায় রাখতে হবে, জন্মসূত্রে পিতা-মাতা না হলেও শিক্ষকই একজন শিক্ষার্থীর মূল অভিভাবক। তাঁর হাতেই নির্ভর করে এক একটি জাতির ভবিষ্যত। তাই সর্বপ্রথম তাঁকে প্রকৃত মানুষ হতে হবে। ভুলে যেতে হবে হিংস্বা, বিদ্বেষ, ক্রোধ আর প্রতিশোধের নেশা। নিজের সন্তানকে নিয়ে একজন মানুষ যেভাবে ভাবে, ঠিক সে ভাবেই অপরের সন্তানদের-কে নিয়ে ইতিবাচক ভাবনা ভাবাই প্রকৃত মানুষের কাজ। আর এ ভাবনা যিনি ভাবতে পারেন তিনিই শিক্ষক তকমা পাওয়া প্রকৃত মানুষ। আর এও মনে রাখা দরকার আদর্শ শিক্ষকের চামড়া গা’য়ে জড়িয়ে যদি অন্যথা করা হয় তবে তার জবাব দিতে হবে চরমভাবে একদিন। একজন আদর্শ শিক্ষকের ফ্রন্টএন্ড-এ আসার পূর্বে সে নিজেকে এভাবে প্রস্তুত করতে পেরেছে কি না তা খতিয়ে দেখার দায়িত্ব প্রকৃত মানুষটার-ই।  

চতুর্থত, সুরুচিসম্পন্ন, স্মার্ট  ও আত্মবিশ্বাসী হতে হবে
সুরুচি বলছি এই কারনে যে, পৃথিবীর সকল মানুষেরই রুচিবোধ আছে, কিন্তু সুরুচি হাতেগোনা। একজন শিক্ষক একটি সমাজের সার্বজনীন মডেল হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে, তাই তাকে প্রতিটি ক্ষেত্রে রুচির উর্ধ্বে সুরুচিবোধ অর্জন করতে হবে। কারন আর দশজনের মতই যদি শিক্ষকের রুচি এ্যভারেজ পর্যায়ে থাকে তবে তাঁকে মডেল হিসেবে কেউ মানবে না এবং শিক্ষকের আসল পরিচয় থেকে সে সরে যাবে। তাই তাকে গ্রহণযোগ্য রুচিসম্মত পোষাক পরিধানসহ তাঁর জীবনের সকল ব্যবহার্য্য বিষয় বা বস্তু স্মার্ট-এর আওতায় থাকতে হবে। তবে সাবধান, স্মার্ট বলতে আবার শিক্ষক শব্দের সঙ্গে মানায় না, এমন কিছু করা যাবে না বা বেহায়াপনার কাছাকাছি যাওয়া যাবে না। আর রুচিবোধ ও স্মার্টনেস-এর বিষয়গুলি যদি একজন মানুষ মাথায় রেখে চলে বা চলতে পারে সে অবশ্যই সমাজের কাছ থেকে প্রশংসা পাবে এবং সমাজের যেকোনো স্তর তাকে সাদরে গ্রহণ করবে, ফলে তাঁর আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে। শিক্ষকের ক্ষেত্রেতো বটেই। প্রতিটি মানুষের জীবনে সাফল্য পেতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও টাচী জায়গা হচ্ছে আত্মবিশ্বাস। আত্মবিশ্বাসী একজন মানুষ নিজেকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে খুব সহজে। তাই শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের সামনে দাঁড়ানোর পূর্বে সুরুচিসম্পন্ন, স্মার্ট  ও আত্মবিশ্বাসী হতে হবে।
পঞ্চমত, আই কন্ট্রাক্ট শেখা ও ব্যবহার

আদর্শ শিক্ষক এর মাপকাঠি।how to became an ideal teacher

 -এর মধ্যে
 অন্যতম বড় গুণ হচ্ছে আই কন্ট্রাক্ট জানা ও সঠিক ব্যবহার করা। আই কন্ট্রাক্ট  এর বাংলা প্রতিশব্দ হচ্ছে- আঁখি মিলন বা নজরে রাখা যা দৃষ্টি বা নজর দ্বারা শাসন করা বোঝায়। এই কৌশল যিনি রপ্ত করতে পারেন তাঁর কাছে পরিবার, সমাজ বা শিক্ষার্থী-কে বশে আনা বা আয়ত্বে রাখা খুবই সহজ। কথায় বলে চোখের ভাষা বোঝাতে পারলে ডিকশনারীর ভাষা নিষ্প্রয়োজন। আর এজন্য তাকে শাসন করার অন্য পন্থাও অবলম্বন করতে হয়না। যদিও আই কন্ট্রাক্ট পদ্ধতিটা রপ্ত করা একটু কঠিন, তবুও একজন আদর্শবান শিক্ষককে এ কৌশল রপ্ত করতেই হবে। সবচেয়ে বড় কারন, বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় শারীরিক আঘাত নিষিদ্ধ। সুতরাং আই কন্ট্রাক্ট জানলে সহজেই সফল শিক্ষক হওয়া যাবে। সমাজের মানুষেরা তাঁকে ইতিবাচক চোখে দেখবে। তাই শিক্ষক হিসেবে উপস্থাপন করার পূর্বে আপনাকে ব্যাকএন্ড-এ আই কন্ট্রাক্ট রপ্ত করতে হবে।

আদর্শ শিক্ষক এর মাপকাঠি  -১, আদর্শ শিক্ষক জাতির বিবেক, আদর্শ শিক্ষক হওয়া জরুরি, আদর্শ শিক্ষক হওয়ার নিয়ম ও কলাকৌশল, আদর্শ শিক্ষক হতে হলে যে যে পদ্ধতি জানা প্রয়োজন
আদর্শ শিক্ষকের প্রতিচ্ছবি

        উপরোক্ত মূল পয়েন্টগুলোর বাইরেও ব্যাকএন্ড-এ একজন আদর্শ শিক্ষক নিম্নোক্ত বিষয়গুলিও চর্চা করবে :
·      অন্যের প্রশংসা করা।
·   নিজের সম্বন্ধে জানা বা নিজেকে নিয়ে সমালোচনা করা বা অন্যদের কাছ থেকে নিজের সম্বন্ধে জেনে নেওয়া।
·      শিক্ষার্থীদের সাথে সম্পর্ক তৈরির কৌশল জানা।
·  নিজে সব জানি এ ধরনের মনোভাব থেকে থাকলে অবশ্যই পরিহার করা।
·  কোনো কিছু অজানা থাকলে অপকটে স্বীকার করা এবং তা জেনে পরবর্তীতে জানিয়ে দেওয়ার অভ্যাস তৈরি করা।
·      সময়ের সাথে নিজেকে বদলানো ও বর্তমানকে জানার আগ্রহ থাকা।

সর্বোপরী একজন আদর্শবান শিক্ষক, শিক্ষার্থীর পাশে ভাল প্রতিবেশী হয়ে থাকবে, এটা আদর্শ শিক্ষক এর মাপকাঠি।how to became an ideal teacher’ -এর অন্যতম স্লোগান।


 আবারো আবেদন : নতুন আসা ও অনেকদিন ধরে শিক্ষকতা করতে থাকা সকল শিক্ষকদের প্রতি বিনীতভাবে অনুরোধ করি, এই সমাজটাকে বিনির্মাণের জন্য যার যার জায়গা থেকে সাধ্যমতো ভূমিকা রাখেন। প্লিজ, প্লিজ, প্লিজ। নইলে বর্তমান সমাজের যে পরিস্থিতি, এভাবে চলতে থাকলে আপনার আমার সন্তান বা তার পরবর্তী প্রজন্মগুলো আপনাকে আমাকে কোনভাবেই ক্ষমা করবে না। কারন আমরা যেভাবে শিক্ষক, ঈমাম, ডাক্তার, মন্ত্রী ইত্যাদি ইত্যাদি হয়ে যত নিকৃষ্ট পর্যায়ে নেমে গেছি তাতে করে এপারে ওপারে ক্ষমা পাওয়ার বা ভাল থাকার কোন রাস্তা খোলা থাকছে বলে মনে হয় না আমার। খেয়াল করলেই দেখবেন, একজন নেশাগ্রস্থ, চোর, বদমাইশ বা অশিক্ষিত লোকেরা যে নেগেটিভ আচরণ করে থাকে, যেমন: মিথ্যা বলা, ছল-চাতুরী করা, কাউকে কথা দিয়ে কথা না রাখা, মানুষকে মূল্যায়ণ না করা, ইত্যাদি ইত্যাদি, তাদের থেকে বরং আমরা শিক্ষক তথা শিক্ষিত সমাজ আরো কয়েকধাপ এগিয়ে। ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে আমরা। তাই আমার আহ্বান অন্ততঃ আমরা যারা শিক্ষকগোষ্ঠী তাঁরা মিথ্যা, ধোকাবাজী, ছল-চাতুরী, কারো পিছে লেগে থাকা, কথা দিয়ে কথা না রাখা এসব ছেড়ে অন্ততঃ ন্যূনতম বেঁচে থাকার পরিবেশ নিশ্চিত করে রেখে যাই। ভেবে দেখেন আমরাতো এসমাজের মডেল, উচ্চ মর্যাদার আসনে বসে আছি, কিন্তু মর্য়াদার আসনে বসে যে সমস্ত নিকৃষ্ট জানোয়ারের মতো কাজ করে যাচ্ছি, এতে আমাদের সৃষ্টিকর্তা লজ্জায় পড়ে যাচ্ছেন। তাই আসুন ১-কে ১-ই বলি, তাকে ২/৩ বানানোর চেষ্টা না করি। কারন একটা ১-কে ২/৩ বানাতে কত ১-কে যে বিনষ্ট করে ফেলছি, তা হিসেবের বাইরে। আসুন , সত্য বলে জীবন দিই মিথ্যার প্রাসাদ ছেড়ে। কারন আমাদের রবের কথায় মহাগ্রন্থ পবিত্র ‘আল-কোরআন’ সৃষ্টি আর আমাদের নবীর মুখের বাণীতে হাদিস তৈরি। তাঁদের-ই বান্দা আর উম্মত হয়ে আমাদের মুখের জবাণ.......... ভাবতেই অবাক লাগে।

ধন্যবাদান্তে ;


লিখেছেন : মসনদ সাগর
শিক্ষক, মাস্টার ট্রেইনার, লেখক ও ফ্রিল্যান্সার, 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ